দেশের সকল হেল্প লাইন নাম্বার-
খোলাডেক্স : বিপদ বলতে শুধুই বিপদ।যখন পড়েন তখন কোন কিছু কাজ করে না। আর তখন কাজ করবে আপনার জানা কিছু ফোন নাম্বার। যেগুলা আপনার জানা খুবই দরকার…দেশের যেকোন স্থানে এসব নাম্বার আপনার কাছে আসতে পারে…যেমন-পুলিশ,ফায়ার সার্ভিস,অ্যাম্বুলেন্স,হসপিটাল,নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার,কোথায়,কিভাবে, কার কাছে যাবেন,সরকারি কোন অফিসের সেবা ইত্যা.দি…
আপনি যখন কোন বিপদে পড়বেন তখন জানা জিনিস গুলো আপনাকে খুব কাজ দিবে।
প্রতিনিয়ত জীবনে নানা সমস্যার মুখোমুখি হয় মানুষ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই যুগে, তখন একটি কথাই মনে হয় সবার, যদি এমন কোনো ফোন নম্বর থাকত যেখান থেকে মিলবে সমস্যার সমাধান।
এই সমস্যা সমাধানে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ১৬টি কল সেন্টার সেবা চালু রয়েছে।
৯৯৯-এ জাতীয় জরুরি সেবা-
অপরাধ, প্রাণনাশের আশঙ্কা, দুর্ঘটনায় পড়লে, জরুরিভাবে অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাওয়া যায়। এই নম্বরে কল করলেই পাওয়া যাবে যাবে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা। জাতীয় জরুরি সেবার এই নম্বরে কল করতে কোনো অর্থ খরচ হবে না। এই হেল্পডেস্ক সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একটি পাইলট কর্মসূচি। ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সেবাটি চালু হয়।
এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সরকারি সেবা, জীবন ও জীবিকা বিষয়ক তথ্য পরামর্শ সেবা দেয় এই কল সেন্টার।
১০৯৪১ দুর্যোগের আগাম বার্তা-
আবহাওয়া ও দুর্যোগ সম্পর্কে আগে থেকেই বার্তা দিতে ২০১৩ সালের মার্চ যাত্রা শুরু করে এই কল সেন্টার। এই কল সেন্টারটি পরিচালনা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এ ছাড়া নদীবন্দরগুলোর জন্য সতর্ক সংকেত ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্সের (আইভিআর) মাধ্যমে দেওয়া হয়। ১০৯৪১ নম্বরে কল করে এসব সেবা পাওয়া যাবে। কলরেট ২ টাকা ৪৫ পয়সা প্রযোজ্য। তবে এই কল সেন্টারের ১০৯০ নম্বরে টেলিটক ও গ্রামীণফোন অপারেটর থেকে কল করে বিনামূল্যে সেবা পাওয়া যাবে।
১০৯৮ চাইল্ড হেল্প লাইন -
সুবিধাবঞ্চিত নির্যাতিত ও বিপদাপন্ন শিশুদের ২৪ ঘণ্টা জরুরি সহায়তা সেবা দেওয়া হয় এই কল সেন্টার। ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল এই কল সেন্টার চালু হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্ববধানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অপরাজেয় বাংলাদেশ এই কল সেন্টারটি পরিচালনা করছে। এই সেন্টারে কল করতে ১০৯৮ নম্বরে কল করতে হবে। এতে কোনো চার্জ প্রযোজ্য নয়।
১০৯ নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে-
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ২০১২ সালের ১৯ জুন এই কল সেন্টার যাত্রা শুরু করে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল কর্মসূচির আওতায় এই কল সেন্টারটি পরিচালনা করা হয়। এর নম্বর ১০৯ সব অপারেটর থেকে এই নম্বরে কল করা যাবে। এ ছাড়া গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক থেকে ১০৯২১ নম্বরে কল করা যাবে। এই দুটি নম্বরে কল করে সাহায্যে চাইলে ঘটনাস্থলের জরুরি খবর স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, পুলিশ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট এনজিও সংগঠন-এই চার জায়গায় একই সঙ্গে পাঠানো হয়ে থাকে। কোনো ধরনের চার্জ ছাড়াই কল করা যাবে ওই দুই নম্বরে।
১০০ ডিএমপি জরুরি হেল্প লাইন-
রাজধানী বাসীকে নিরাপত্তা সেবা দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ১০০ নম্বরের কল সেন্টার চালু করে। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি এই সেবা চালু হয়। ১০০ নম্বরে কল করে অপরাধজনিত সমস্যা বা জরুরি সেবার কথা জানালে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যেকোনো ফোন থেকে এই নম্বরে কল করতে কোনো খরচ লাগবে না।
১৬৪৩০ সরকারি আইন সেবায়-
দুঃস্থদের বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দিতে ২০১৬ সালের এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে এই হেল্পলাইন। এর শর্টকোড নম্বর হলো ১৬৪৩০। এই হেল্পলাইনটি পরিচালনা করছে আইন ও বিচার বিভাগের অধীনস্ত জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা। এই হেল্পলাইনে কল করতে কোনো কলচার্জ নেওয়া হয় না।
১৬১২৩ কৃষি কল সেন্টার-
কৃষি বিষয়ক তথ্য সহায়তায় ২০১৪ সালের জুনে এই কল সেন্টারটি যাত্রা শুরু করে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কৃষি তথ্য সার্ভিস সেন্টারটি পরিচালনা করে। ১৬১২৩ নম্বরে কল করে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ে যেকোনো সমস্যার পরামর্শ পাওয়া যাবে। গ্রামীণফোন নম্বর থেকে বিনামূল্যে কল করা যাবে। তবে অন্য যেকোনো অপারেটর থেকে প্রতি মিনিটে মাত্র ২৯ পয়সায় কথা বলা যাবে।
বিটিসিএল বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ২০১৫ সালে ২১ মে ফোন গ্রাহকদের জন্য নিজস্ব কল সেন্টার চালু করে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এই কল সেন্টার পরিচালনা করে। ১৬৪০২ নম্বরে কল করে গ্রাহকরা ফোন বিলসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করতে পারেন। এ জন্য গ্রামীণফোন ছাড়া অন্য অপারেটরের স্বাভাবিক কলরেট প্রযোজ্য। শুধু ঢাকা জেলার গ্রাহকরা বিটিসিএলের এই হেল্পলাইনের সেবা পাবেন।
১৬২৬৩ স্বাস্থ্য বাতায়ন-
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য ও পরামর্শ দেওয়া হয় এই কল সেন্টার থেকে। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল এ কল সেন্টার যাত্রা শুরু করে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগ সেন্টারটি পরিচালনা করছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যে যেকোনো বিষয়ে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গ্রাহকরা ১৬২৬৩ নম্বরে কল করতে পারেন। এ জন্য প্রতি মিনিটে দুই টাকা ৪৫ পয়সা কলরেট প্রযোজ্য হবে। এ ছাড়া ওই নম্বরে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগও করা যাবে।
১৬১৬২ ঢাকা ওয়াসা
ঢাকা ওয়াসার গ্রাহকরা পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও ড্রেনেজ সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ করতে পারেন এই কল সেন্টারে। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে এ কল সেন্টারটি। ওয়াসা লিংক ১৬১৬২ নামেও এটি পরিচিত। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ সেন্টারটি পরিচালনা করে।
এ ছাড়া ওয়াসার বিল সংক্রান্ত অভিযোগও করা যাবে ১৬১৬২ নম্বরে। এ জন্য মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর রেগুলার কলরেট প্রযোজ্য হবে।
১০৯২২ মহিলা সংস্থা বা তথ্য আপার-
কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা, জেন্ডার ও আইন সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য ও পরামর্শ সেবা দিয়ে থাকে এই কল সেন্টার। এই কল সেন্টারের নম্বর ১০৯২২। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে জাতীয় মহিলা সংস্থা। ২০১১ সালের ৫ জুলাই হেল্পলাইনটি চালু হয়। কলরেট প্রতি মিনিট দুই টাকা।
এ দুটি নাম্বার -
০১৭৯৯০৯০০১১ ও ০১৭৯৯০৯০০২২
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর এই সেবা সেন্টার চালু করে। এই দুটি নম্বরে কল করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেকোনো ধরনের আইনি তথ্য, পরামর্শ ও কাউন্সেলিং সেবা পাবেন।
১৬২৩৬ ব্যাংকিং সমস্যায়-
ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে কোনো অভিযোগ থাকলে জানাতে হবে ১৬২৩৬ নম্বরে। এই নম্বরে কল করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালে এই হেল্পলাইন চালু হয়। যেকোনো অপারেটরের নিয়মিত কলচার্জে ওই নম্বরে কল করা যায়।
জাতীয় পরিচয়পত্রের ১০৫
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন, সংশোধন ও হালনাগাদ সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ প্রদানের জন্য নির্বাচন কমিশন একটি হেল্পলাইন চালু করেছে। এটি চালু হয় ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে। ১০৫ নম্বরে কল করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ সেবা পাওয়া যাবে। এই নম্বরের জন্য দুই টাকা ৪৫ পয়সা কলরেট প্রযোজ্য।
ইউনিয়ন পরিষদ হেল্পলাইন- ১৬২৫৬
ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে যেকোনো সরকারি ভাতা বা অনুদান সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হয় এই কল সেন্টার থেকে। ২০১২ সালে এটি যাত্রা শুরু করে। স্থানীয় সরকার বিভাগের লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রোজেক্ট এই কল সেন্টার পরিচালনা করে।
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ১৬২৫৬ নম্বরে কল করে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা ও কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে। এই সেবার জন্য প্রতি মিনিট দুই টাকা ৪৫ পয়সা কলরেট প্রযোজ্য।
প্রবাসীবন্ধু কল সেন্টার-০৯৬৫৪৩৩৩৩৩৩
প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেকোনো সমস্যায় এই কল সেন্টারে ফোন করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের কারিগরী সহযোগিতায় ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ড এই কল সেন্টার পরিচালনা করছে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর এই সেবা সেন্টারটি যাত্রা শুরু করে।
সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও জর্ডানে বসবাসরত প্রবাসীরা এই ০৯৬৫৪৩৩৩৩৩৩ নম্বরে কল করতে পারবেন। এখানে কল করে প্রবাসীদের অভিযোগ, পাসপোর্ট-সংক্রান্ত সমস্যা, মৃতদেহ পরিবহন ও দাফনসংক্রান্ত বিষয়, আইনগত তথ্য ও সেবা, অসুস্থ কর্মীদের আর্থিক সহায়তা, প্রবাসে আটক কর্মীদের মুক্ত করাসহ নানা বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কল সেন্টারে কল করা যাবে। ওই নম্বর ছাড়াও ভাইবার, ইমো, হোয়াটস অ্যাপে ০১৬৭৮৬৬৮৮১৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন প্রবাসীরা।
খোলাডাক/ আ এ