চিত্রনায়িকা সিমলার একি হাল!
বিনোদন প্রতিবেদক
ঢাকাই ছবির চিত্রনায়িকা সিমলা দীর্ঘ অনেকদিন ধরেই নেই চলচ্চিত্র পাড়ায়। ১৯৯৯ সালে প্রয়াত গুণী নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘ম্যাডাম ফুলি’ ছবির মাধ্যমে রূপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে মিষ্টি হাসির এই নায়িকার। প্রথম ছবিতেই করেছিলেন বাজিমাত। ঘরে তুলেছিলেন সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী যিনি অভিষেকের সিনেমা দিয়েই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছিলেন।
এরপর অনেক ছবিতে দেখা গেলেও সেই ছবির সাফল্য আজও ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। নানান কারণে বিভিন্ন সময় আলোচনায় এসেছেন ম্যাডাম ফুলি খ্যাত এই নায়িকা। ২০১৫ সালে ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ সিনেমায় অভিনয় করে নতুন করে আলোচনায় আসেন। এরপর থেকে চলচ্চিত্রে তাকে দেখা যায়নি।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে আশিকুর রহমান আশিক পরিচালিত ‘ম্যাডাম ফুলি-২’ সিনেমায় কাজ করার কথা থাকলেও সিনেমার দৃশ্যায়নের কাজ শুরু হয়নি। সিমলা বেশির ভাগ সময় দেশের বাইরেই অবস্থান করেন। ২০১৭ সালের মে মাসে বাংলাদেশে আসেন সিমলা। তবে দেশে আসার পর মিডিয়ার বাইরে রয়েছেন। মাঝে অনেকটা দিন ছিলেন কলকাতাতে। সেখান থেকে জানিয়েছিলেন ওপার বাংলায় কাজ করছেন এই নায়িকা। শুধু তাই নয় গেল কয়েকমাস আগেও তিনি জানান, বলিউডের ছবিতে তিনি কাজ করছেন। সেটা নিয়েই তার ব্যস্ততা।
কিন্তু বাংলাদেশের কোন ছবিতে দেখা যায় না তাকে অনেক দিন। দেশে আসলেও খুব বেশি দিন থাকেন না। কিছু দিন থেকেই আবার উড়াল দেন কলকাতায়।
চলতি বছরের শুরুর দিকে নতুন করে আলোচনায় এসেছিলেন বিমান ছিনতাই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী ময়ুরপঙ্খী ফ্লাইট ছিনতাই করার চেষ্টা করেছিলেন পলাশ আহমেদ ওরফে মাহিবি খান নামের একজন লোক। পরে জানা যায় সেই লোক চিত্রনায়িকা সিমলার স্বামী। সেটা প্রকাশ্যে আসার পর সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। প্রথম দিকে স্বীকার না করলেও সিমলা পরে জানান যে, তিনি বিবাহিত এবং পলাশ তার স্বামী। কিন্তু বিয়ের নয় মাসের মধ্যেই তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর তারা আলাদা থাকতেন।
বিমান ছিনতাইয়ের ঘতনার সময় সিমলা ছিলেন কলকাতাতে। প্যারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে জিম্মিদশা থেকে বিমানটি মুক্ত করে। সেসময় অভিযানেই নিহত হন ছিনতাই চেষ্টাকারী পলাশ আহমেদ। এ ঘটনায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এ্যাভিয়েশন বিভাগের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যাতে পলাশ আহমেদসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে।
সেই মামলার কারণে আজ সকালে সিমলাকে টানা পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। তিনি বর্তমানে দেশে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা চলে এ জিজ্ঞাসাবাদ। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর মিলেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া।
উল্লেখ্য, সিমলার পুরো নাম শামসুন নাহার। ১৯৮২ সালের ৪ ডিসেম্বর (বিবাহের কাবিননামা অনুসারে) ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন সিমলা। তার পিতার নাম আব্দুল মাজেদ ও মাতার নাম নুরুন নাহার। তিনি শৈলকূপা গার্লস স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে শৈলকূপা সরকারী কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন এবং তার লেখাপড়ার ইতি ঘটে। ছয় ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে সিমলা সবার ছোট।