
বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » বিবিধ » ক্লিনিকে ঔষধ নেই, ইপিআই কেন্দ্রে শিশু টিকা সংকট, ভোগান্তিতে প্রান্তিক জনগণ
ক্লিনিকে ঔষধ নেই, ইপিআই কেন্দ্রে শিশু টিকা সংকট, ভোগান্তিতে প্রান্তিক জনগণ
আমজাদ হোসেন আমু,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ;
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে কমিউনিটি ক্লিনিকে ঔষধ সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভীড় জমা রোগীদের প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ দিতে হিমশিম খাচ্ছে হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারগণ। ঔষধ সংকটে ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা। এদিকে শিশুদের প্রয়োজনীয় টিকা সংকটও দেখা দিয়েছে। টিকা সংকটে বাচ্চাদের নিয়ে খুবই দু:চিন্তায় রয়েছে অভিভাবকগণ। উপজেলায় ২২কমিউনিটি ক্লিনিক ও ২১৬টি ইপিআই কেন্দ্র রয়েছে।
উপজেলার চর কালকিনি এলাকার গৃহবধু রাবেয়া, রাহেলা, শিশু সামিউল কমিউনিটি ক্লিনিকে ঔষধের জন্য যান। কিন্তু সেখানে কোন ঔষধ পাননি। তাদের আর্থিক অবস্থাও তেমন ভালো নই। তাদের একমাত্র ভরসা বাড়ির পাশের কমিউনিটি ক্লিনিক। কিন্ত গত কয়েক মাস যাবত ক্লিনিক থেকে দরকারি ঔষধ প্রদান করতে পারছে না কর্মকর্তারা।
চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের প্রার্থ ভৌমিক বলেন, তার শিশু সন্তানকে টিকা দিতে পারছে না। কয়েকদিন ক্লিনিকে নিয়ে টিকা না পেয়ে ফেরৎ আসেন। বাচ্চার দেড় মাস হলেও প্রয়োজনীয় টিকা না দিতে পারেনি। এতে কোন সমস্যায় পড়েন কি না..! তিনি বেশ দু:চিন্তায় রয়েছেন।
আনোয়ার হোসাইন বলেন, তার ভাতিজি হয়েছে গত ২মাস। এখন পর্যন্ত কোন টিকা দিতে পারেনি। শিশুর টিকা নিয়ে বেশ দু;চিন্তায় রয়েছে।
ইপিআই কেন্দ্রের তথ্যমতে মো.শরীফুল ইসলাম জানান, বিসিজি(যক্ষা),পেন্টাভ্যালট ভিপিটি হেপাটাইটিস বি হিব (ডিপথেরিয়া হুপিংকাশি ধনুষ্টংকার), পিসিভি(নিউমোনিয়া), বিওপিভি(পোলিওমাইলাইটিস), আইপিভি, এমআর(হাম ও রোদেলা) টিকা খুবই সংকট রয়েছে। গত ১০মাসে কোন টিকা শিশুদের শরীরে পুশ করতে পারেনি। চরম টিকা সংকটে ভুগছে টিকাদান কারীরা। প্রতিটি ইউনিয়নে ২৪টা করে ইপিআই কেন্দ্র রয়েছে। এতে প্রায় ১২শ শিশু প্রতিটি ইউনিয়নে টিকা কর্মসূচির আওয়াতায় থাকে।
উপজেলার উত্তর চর লরেঞ্চ কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মোঃ এরশাদ জানান, সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তাদের ক্লিনিকের জন্য ঔষধ সরবরাহ করা হয়েছিল। এরপর ৫ মাস শেষে ৬ মাস হতে চলছে কিন্ত আর কোন ঔষধ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন প্রায় ২শ নারী -পুরুষ চিকিৎসা নিতে আসেন।
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কামরুল আহসান বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর প্রথম দিকে আমাদের প্রতিটি ক্লিনিকিরে জন্য ২৮ রকমের ঔষধ সরবরাহ করেছিল। পরে ২৭ রকম ঔষধ সরবরাহ করা হয়েছিল। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর মাসে ২২ রকমে ঔষধ প্রদান করা হয়। কিন্ত এখন ৫ মাস যাবত আর কোন ঔষধ সরবরাহ করা হয়নি। এ হেলথ প্রোভাইডার বলেন, এখন একদিকে গত ৮ মাস যাবত আমরা বেতন পাই না এবং অন্যদিকে প্রায় ৬ মাস যাবত ক্লিনিকে ঔষধ পাচ্ছি না।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাব্যসাচী নাথ বলেন, অফিসিয়াল সমস্যার কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে গত কয়েক মাস যাবত ঔষধ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এ সমস্যা সমাধান হবে তা জানাতে পারেনি এ কর্মকর্তা। এদিকে শিশু টিকা মাঝেমধ্যে আসে, তবে সম্পূর্ণ ভাবে টিকা সরবরাহ দেয়া যাচ্ছে না।