শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » অপরাধ ও দুর্নীতি » যুবলীগের দাপটে বৃদ্ধের ৪টি গরু আত্মসাৎ, ফেরৎ চাইলে ভয় দেখাচ্ছে
যুবলীগের দাপটে বৃদ্ধের ৪টি গরু আত্মসাৎ, ফেরৎ চাইলে ভয় দেখাচ্ছে
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : ভয়-ভীতি দেখিয়ে বৃদ্ধ কৃষক আব্দুল বারেক মিয়ার প্রায় ৪লাখ টাকা দামে ৪টি গরু আত্মসাৎ করে ফেরত দেয়নি ৬বছরেও এমন অভিযোগ উঠে স্থানীয় যুবলীগ নেতা বর্তমান মেম্বার মো.জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
বৃদ্ধ আব্দুল বারেক মিয়া জানান, ২০১৮সালে তার ছেলের বউ হঠাৎ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এতে পুরো পরিবার ভয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। সুযোগ বুঝে জসিম উদ্দিন বৃদ্ধের খামারে থাকা ৯টি গরুর ৮টি তার বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। বৃদ্ধ ব্যক্তি অসহায়ত্বের মধ্যে ভয় পেয়ে গরুগুলো জসিম উদ্দিনের বাড়িতে রেখে পালিয়ে যান। একদিন পরে তার আত্মীয় দিয়ে গরুগুলো নিতে গেলে জসিম উদ্দিন ৪টি গরু রেখে বাকি ৪টি গরু ফেরত দেন। বাছুরসহ ৪টি গরু ফেরত চাইলে জসিম ও তার ভাই নোমান বউ হত্যার বিষয়ে ভয়-ভীতি দেখান। বৃদ্ধের পরিবারকে গ্রাম ছাড়া পরামর্শে হুমকি দেন। এতে ভয়ে বৃদ্ধের পুরো পরিবার প্রায় দু’বছর বাড়ি ছাড়া হন। গত ৬বছরেও বৃদ্ধের গরুগুলো আর বাড়িতে ফেরত দেয়নি জসিম মেম্বার। একাধিক বার জসিম উদ্দিনকে বলেও কোন লাভ হয়নি। সে বর্তমানে মেম্বার এবং আওয়ামী লীগের দাপটে ভয় ও মামলা-হামলার হুমকি দিচ্ছে।
বিবি আয়েশা জানান, তার ছেলে বউ আত্মহত্যার করার পর জসিম মেম্বার ৮টি গরুর তার বাড়িতে নিয়ে যান। পরেদিন গরুর দুধ ধুয়ে আনতে গেলে জসিম ৮টির মধ্যে ৪টি গরুর রেখে দেন। সে এবং তার ভাই বলেন, গরুর তারা পালবে এবং দুধ খাবে। তারা আমাদের দ্রুত তার বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে বলেন। পুলিশ আমাদের ধরবে ভয় দেখান। আমরা ভয়ে পালিয়ে যায়। দু’বছর পরে বাড়িতে ফেরত আসি। জসিমের কাছে গরুগুলো একাধিক বার চাইলেও দেয়নি। উল্টো ভয় দেখাচ্ছে। সে বর্তমান মেম্বার এবং আওয়ামী লীগ করেন। জসিমের কাছে গরু কেন চায়, সে উল্টো বলেন, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসলে বাড়ি ছাড়া করবে। হামলা-মামলা দিবেন।
স্থানীয় জনতা জানান, তৎকালীন সময়ে মো.জসিম উদ্দিন যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তার দাপটে পুরো এলাকা থরথর করে কম্পন হইত। সে এলাকায় দলের দাপটে সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তার ভয়ে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না। সে বৃদ্ধের গরু নিয়েছে, এটা সবাই জানে। যুবলীগের পাওয়ার দেখিয়ে ভোট চুরি করে মেম্বার হন। মেম্বার হওয়ার পর থেকে নিরবে চাঁদাবাজি, রাহাজানি, মানুষের উপর হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করে। তার কু-কৃর্তির শেষ নেই। বৃদ্ধের গরুগুলো ফেরত দিতে একাধিক বার বলা হয়েছে। উল্টো সে বলে বেড়াচ্ছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেখিয়ে নিবে।
মো.জসিম উদ্দিন উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা ভবানীগন্জীয়া গো বাড়ির মকবুল আহমদের ছেলে। সে চর কাদির ইউপির ৮নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমান ইউপি সদস্য ও ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। ৪ভোটের ব্যবধানে হেরে যান।
মো.জসিম উদ্দিন মেম্বার জানান, তিনি কোন বৃদ্ধের গরু আত্মসাতে জড়িত নন। বরং বৃদ্ধের ছেলের কাছে তিনি টাকা পাবেন। টাকা দেয়ার ভয়ে এমন মিথ্যে-বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে।
বৃদ্ধ আব্দুল বারেক মিয়া ২০১২সালে মেঘনার ভাঙনে সব হারিয়ে উপজেলার সাহেবের হাটের চর জগবন্ধু গ্রাম থেকে চর কাদিরা এলাকায় বাড়ি নির্মান করে বসবাস করছে। বৃদ্ধ আব্দুল বারেক মিয়া বয়স ৭৫বছর।
কমলনগর থানা ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, গরু আত্মসাৎ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
ভী-বাণী /ডেস্ক/ এমএইচ