বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » বিবিধ » হাসপাতালে কর্তব্যরত ‘সেবক’ যখন পাগল..! দিচ্ছে ভুল চিকিৎসা
হাসপাতালে কর্তব্যরত ‘সেবক’ যখন পাগল..! দিচ্ছে ভুল চিকিৎসা
আমজাদ হোসেন আমু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা হাসপাতালে কর্তব্যরত ‘সেবক’ নার্স মোসা: নুর জাহান বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে পাগলের মত আচারণ ও মারধরের অভিযোগ উঠে। রোগী এবং হাসপাতাল কতৃপক্ষ নারী নার্সের দৈনন্দিন কার্যকলাপে বিব্রত ও বিরক্ত হচ্ছেন। দিচ্ছেন ভুল চিকিৎসা। তার দায়িত্বরত চিকিৎসায় রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানান, আড়াই লাখ জনগণের ৩১শয্যা বিশিষ্ট্য হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের উপছেপড়া ভীড় রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২৫০-৩০০জন রোগীর ভীড় থাকে। এতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। ডাক্তারের পাশাপাশি নার্সরাও কাজ করছে। তবে ১০জন নার্সের মধ্যে মোসা: নুর জাহান নামে নারী নার্সের আচারণ অশালীন। যোগদানের পর থেকে তার আচারণগত সমস্যা দেখা দেয়। এমবিবিএস ডাক্তার অথবা ডিউটিরতরা রোগীদের চিকিৎসা পত্রে ঔষধ লিখে দিলে সে হাসি-ঠাট্টা ও অশালীন আচারণ করে। হঠাৎ হঠাৎ রোগীর গায়ে পর্যন্ত হাত তোলেন। ভর্তিকৃত রোগীদের ভুল ইনজেকশন পুশ, মেডিসিন চুরি, মেডিসিন খাওয়ানোসহ যাবতীয় ভুল করছে। তার দায়িত্বের থাকা রোগীরা মৃত্যু ঝুঁকি থাকে।
সেবা নিতে আসা রোগীদের দাবি, নার্স মোসা: নুরজাহান পাগলের মত আচারণ করেন। তার আচারণে সাধারণ রোগীরা বিরক্ত ও বিব্রত। তিনি রোগীদের মাঝে-মধ্যে মারধর করেন। রোগীদের ঔষধ লেখা প্রেসকিপ্ট ছেড়ে ফেলা, আজে-বাজে কথা বলাসহ নানান রকম অশালীন ব্যবহার করেন। তাদের দাবি, নার্স নুর জাহান কি সেবক..? না কি পাগল..? পাগল দিয়ে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের কেন সেবা বা চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে..? । এটা রোগীদের সাথে মশকরা ছাড়া কিছুই নয়। দ্রুত নার্স নুর জাহানকে অপসারণের দাবি জানান। মানসিক ভারসাম্যহীন পাগল দিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা বা সেবা দেয়া সম্ভব না। যেকোন সময় অঘটন ঘটতে পারে।
পরিবার সূত্রে তার বাবা মো.হুমায়ুন জানান, তার মেয়ের নুর জাহানের মানসিক সমস্যা রয়েছে। সে ঢাকা শেখ হাছিনা বার্ন ইউনিট ও প্লাস্টিক সার্জারিতে কাজ করতো। সেখানে তার আচারণে সমস্যা এবং মানসিক ভারসাম্য দেখা দিলে তাকে রামগতি হাসপাতালে প্রেরণ করে। তাকে নিয়ে পরিবার-পরিজন খুবই বিপদগ্রস্থ। সে বাড়িতেও মানুষের সাথে বাজে ব্যবহার করে। হঠাৎ হঠাৎ চিৎকার চেছা-মেছি করে। কারো কথা শুনে না। আমরা ভেবেছি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সম্পৃক্ত থাকলে সুস্থ্য হয়ে যাবে। তবে তার পাগলামী বাড়ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.কামনাশিস মজুমদার জানান, হাসপাতালে রোগীর প্রচুর ভীড় থাকে। এমবিবিএস ডাক্তারের পাশাপাশি ডিপ্লোমা নার্সরা কিছু সেবা দিয়ে থাকে। নার্স নুর জাহান যোগদানের পর থেকে তার অশালীন আচারণ পরিলক্ষিত হয়। প্রতিদিন রোগী, ডাক্তার, নার্সদের সাথে বাজে ব্যবহার এবং মারধরের ঘটনা ঘটছে। হঠাৎ ডাক্তার চেম্বারে ডুকে যান। ডিউটিরত অবস্থায় রোগীদের ভুল চিকিৎসা দিচ্ছেন। কয়েকবার নোটিশ করেছি। তার পাগলামী আরও বাড়ছে। যোগদানের পর মানসিক ডাক্তার দেখাতে কয়েকবার ছুটি নিয়েছে। তার ব্যাপারে একাধিকবার উধর্ধতনকে চিঠি দিয়েছি। কোন সূরা হচ্ছে না। প্রতিদিন তাকে নিয়ে বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা আহমেদ কবীর জানান, রামগতি হাসপাতালে নার্স নুর জাহান বেগমের অশোভন আচারণ বা ভারসাম্যহীন কথা-বার্তা বিষয়ে জেনেছি। তার পাগলের মত আচারণে রোগী, ডাক্তার ও হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিব্রত হচ্ছে। নার্স মোসা: নুরজাহান ঢাকা শেখ হাছিনা বার্ন ইউনিট ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনষ্টিটিউটে কাজ করেছে। সেখানে তার মানসিক আচারণগত সমস্যা দেখা দেয়। তার ব্যাপারে কতৃপক্ষদের একাধিকবার জানানো হয়েছে। এছাড়াও রোগীর চাপ এবং জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৫০শয্যা বিশিষ্ট্য করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।