বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » বিবিধ » গৃহবধুর হাটু ভাঙা, শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন, হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগে মানববন্ধন
গৃহবধুর হাটু ভাঙা, শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন, হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগে মানববন্ধন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী প্রবাসী মো.আলা উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্ত্রী জোসনা আক্তার মুন্নিকে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগে মানববন্ধন করে নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।
গৃহবধুর বাবা মো. নুরজ্জামান জানান, তার মেয়ে বিয়ের দেওয়ার পর থেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও তার স্বামী মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। মেয়ের নির্যাতনের বিষয়ে স্থানীয়দের জানানো হলে তারা আপোস মিমাংসা করে দেন। কিছুদিন পর পর আবারও মেয়েকে নির্যাতন করা হয়। মেয়ের বিয়ে হয়েছে দীর্ঘ ১৩বছর। তার ঘরে ১১বছরে একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকেন। হঠাৎ সে বাড়ি আসে। বাড়ি আসার ৫-৬দিন পর মেয়েকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন।
তিনি আরও জানান, যেদিন মেয়ের মারা যান। হঠাৎ স্থানীয় লোকজন জানান তার মেয়ে ঘরে মধ্যে ফ্যানের সাথে ঝুলে রয়েছে। শুনে মেয়েকে দেখতে যান। মেয়ের ঝুলন্ত ছবি দেখে বেহুশ হয়ে যান তিনি। মেয়ের হাটু ঘাটের সাথে ভেঙে রয়েছে, শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। মেয়ের লাশ দেখে সহ্য করতে পারিনি। পুলিশ এসে মেয়ের লাশ থানা নিয়ে যান। পরে পোষ্ট মর্টেম করে লাশ দিলে দাফন করি। তিনি তার মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করেন।
গৃহবধুর ভাই মো.খোকন জানান, দীর্ঘদিন যাবত তার বোনের উপর স্বামী আলা উদ্দিন ও তার পরিবার নির্যাতন করছে। হঠাৎ বোনের স্বামী বাড়িতে আসার ৫-৬দিন পর বোনের ঝুলন্ত মরদেহের খবর পাওয়া যায়। বোনের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে দেখি হাটু ভাঙা ঝুলন্ত দেহ, শরীরে একাধিক আঘাতে চিহ্ন। এটা কখনোই আত্মহত্যা হতে পারে না। এটা নির্মম নির্যাতনে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বোন হত্যা বিচার দাবি করেন তিনি।
সোমবার (২৪জুন) সকালে উপজেলার লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়কের কোম্পানি রাস্তার মাথায় নিহত গৃহবধুর পরিবার ও এলাকা বাসি মানববন্ধন ও মিছিল প্রতিবাদ জানান। মানববন্ধনে স্থানীয় স্বজনরা, গৃহবধু জোসনা আক্তার মুন্নি হত্যার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন। তদন্ত করে অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানান তারা।
অভিযুক্ত প্রবাসী মো.আলা উদ্দিনের বাবা মো. নজির আহম্মদ জানান, তার ছেলে আলা উদ্দিন দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকেন। সে বাড়িতে আসার ৫-৬দিন পর জোসনা আক্তার মুন্নি আত্মহত্যা করেন। তার ছেলে বউ জোসনা আক্তার মুন্নি ছিলেন মানসিক রোগী। দীর্ঘদিন মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। হঠাৎ কি কারনে ছেলে বউ আত্মহত্যা করেছে তিনি জানেন না।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মে উপজেলার চর লরেন্স এলাকায় শ্বশুড় বাড়ির বসতঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস লাগানো গৃহবধূ জোসনার আক্তার মুন্নির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গৃহবধু জোসনা আক্তার মুন্নি উপজেলার চর লরেন্স ইউনিয়নের আল কাড়িগো বাড়ির মো.নুরজ্জামানের মেয়ে এবং অভিযুক্ত মো.আলা উদ্দিন একই এলাকার আজাদের বাপের বাড়ির মো. নজির আহাম্মদের ছেলে।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো.তহিদুল ইসলাম জানান, গত মে মাসে গৃহবধু জোসনা আক্তার মুন্নির ঝুলন্ত মরদেহ পুলিশ বসত ঘর থেকে উদ্ধার করে। মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে গৃহবধুর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোট আসলে মামলা সাপোক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভী-বাণী/ডেস্ক/আমু