বুধবার, ৩০ আগস্ট ২০২৩
প্রথম পাতা » অপরাধ ও দুর্নীতি » আশ্রয়ন প্রকল্প- বালুর আস্তর খসে পড়ছে, নিম্মমানের সামগ্রীর ব্যবহার
আশ্রয়ন প্রকল্প- বালুর আস্তর খসে পড়ছে, নিম্মমানের সামগ্রীর ব্যবহার
আমজাদ হোসেন আমু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া চতুর্থ পর্যায়ের আশ্রয়ন প্রকল্পের ৩০টি ঘরে নিম্মমানের ইট, বালু, রট, সিমেন্ট এর ব্যবহার করছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তারা এমন অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
উপজেলার চররমিজ ও চরগাজী ইউনিয়নের চলমান আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজে যথাযথভাবে তদারকি না করায় অনিয়মের এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয়রা দাবি করেন, সরকারে দেয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলোর কাজ যথাযথভাবে করা হচ্ছে না। দর-দামের রাজমেস্ত্রি দিয়ে কর্নটাকে কাজ করাচ্ছেন। কাজের শুরু থেকে এমন অনিয়ম হলে পুরো কাজ কিভাবে হবে..! আঙুলের খোঁজায় উঠছে সিমেন্ট-বালুর প্রলেস্তর।
(আস্তর)।
তারা আরও অভিযোগ করে, উপজেলার চরগাজী (আজাদ মার্কেট এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৬টি ঘর ও চররমিজ ইউনিয়নে চরমেহের ৪নং ওয়ার্ডে ১৪টি ঘরের কাজ চলছে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে আশ্রয়ণ প্রকল্প-৪ এর ৩০টি ঘরের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষের দিকে। কাজে তদারকি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি না থাকায় ঘরের গুণগত মান খারাপ হচ্ছে। কনর্টাক দেয়া মিস্ত্রীরা নিজের মত জীর্নশীর্ন কাজ করে দ্বায় সারা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আঙুলের খোঁজায় বালুর আস্তর উঠে যাচ্ছে।শুধু সিমেন্ট ছাড়াও বালু দিয়ে কাজ করছে। চলমান ঘরের নামমাত্র ফ্লোরঢালাই, নিম্মমানের লোকাল বালু, ৩-৪ নম্বর ইট, প্রকল্পের রটের বদলে লোকাল রট ব্যবহার হচ্ছে। এসব নিম্মমানের সামগ্রীর ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন এবং পুরাতন ঘরে ঢোকার পূর্বে ঝুঁকিতে পড়ছে। সদ্য সমাপ্ত কয়েকটি ঘরের লোহার অ্যাঙ্গেল, সানসেড ও মাটিয়া তেল ব্যবহার করা হয়নি। এছাড়াও দেয়ালে কোনধরণের পানির ব্যবহার চোখে পড়েনি।
উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা দিলারা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গরিব ও অসহায় মানুষকে মুজিববর্ষের ঘর উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ নির্মাণ কাজের কর্মকর্তারা খোঁজ-খবর না করে উল্টো দায়-সারা কাজ করে মানুষকে ঠকিয়ে যাচ্ছে। নিম্মমান সামগ্রীর ঘর বুঝিয়ে দিচ্ছেন তারা। এতে করে ঘরে ঢোকার আগে-ই তারা ভয় পাচ্ছি। এখনই প্লাস্টার খসে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টি ও বাতাসে ঘরে পানি ঢোকে এবং টিন নড়বড় করে।
চরগাজী ইউনিয়নের আশ্রয়ণের বাসিন্দা বজল হক, শাহিদা খাতুন, রিতা রানী দাসসহ অসংখ্য আশ্রয়ণবাসী ক্ষোভ প্রকাশে তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর তৈরিতে নিম্নমানের ইট, বালু ব্যবহার করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, নতুন প্রকল্পের প্রতিটি ঘর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় রাজমিস্ত্রী সাথে চুক্তি করে কাজ করছে। কারণ প্রতিটি ঘর বানাতে অনেক টাকা সরকার বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তারা কমদামে মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করার কারণে এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রতিটি ঘরের রিংস্লাব টয়লেটে বসানোর আগেই ভেঙে পড়েছে। বাথরুম ব্যবহারের অনুপযোগী। কমেট, দরজা-জানালার বিষয়েও এমন অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জানান, চতুর্থ পর্যায়ের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সান্তুনু চৌধুরীকে এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও এতেও কোনো সাড়া মেলেনি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাজিয়া পারভিন জানান, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ন ঘরগুলো তদারকি করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভী-বাণী /ডেস্ক