কোন প্রক্রিয়ায় বিদেশে যাবেন খালেদা জিয়া?
রাজপথের আন্দোলন এবং আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। তবুও দলটি বলছে, রাজপথের আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই তারা তাদের নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করবে। তবে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে চান তার স্বজনরা। কিন্তু প্যারোলে না কি জামিন, কোন প্রক্রিয়ার মুক্তি পেয়ে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বিদেশে যাবেন? এবিষয়টি এখন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। যদিও বিএনপির সংসদ সদস্যরা এবং বেগম জিয়ার স্বজনরা দুই প্রক্রিয়াতেই বেগম জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে রাজি আছেন। তবে বেগম জিয়া বিদেশে যান, সেটা বিএনপির একটি গ্রুপ চান না বলে দলটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে
জামিন না প্যারোলে কোন প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চান- এই প্রশ্নের জবাবে বেগম জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, উনারা (সরকার) যদি জামিন দেন তাহলে উনি যেতে পারবেন।
সেলিমা ইসলাম বলেন, সরকার যদি চায় তাহলেই তো তিনি বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন। তবে এ বিষয়ে খালেদা জিয়া আমাদের সঙ্গে কিছু বলেননি। উনি বলে নাই। আমরাই বিদেশে পাঠাতে চাচ্ছি। কারণ এখানে (বিএসএমএমইউ) তো যে চিকিৎসা দিচ্ছে, এতে কিছুই হচ্ছে না। বরং দিনের দিন খারাপ হচ্ছে।
তবে গত শুক্রবার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখে আসার পর স্বজনদের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমাদের কারো কাছে দেন-দরবার করার দরকার নাই। বেগম জিয়াকে জামিন দেবে না, কারণ সরকার চায় না। সেজন্য জামিন হচ্ছে না। আমরা বলতে চাই, হয় আইনের মাধ্যমে তার জামিন হবে, তার মুক্তি হবে। আর সেটা হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না। তবে তার মুক্তির একমাত্র পথ রাজপথ। যদি রাজপথে আমরা আন্দোলন করি, আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে পারব।
এদিকে খালেদা জিয়া বলেছেন, জামিন আমার হক। দেশের আইন অনুযায়ী আমি জামিন লাভের যোগ্য। আমি তো কোনো অপরাধ করিনি। সুতরাং এখানে প্যারোলের প্রশ্ন কেন আসবে? গত ২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বরাত বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি এ কথা বলেন।
অপরদিকে গত ১ ও ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন দলটির সংসদ সদস্যরা। ওই সময় দলটির সংসদ সদস্যরা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এবিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ম্যাডামের যে আপসহীন উপাধি আছে, সেটা খারিজ করতে গিয়ে ধরা (বিএনপির এমপিরা) খাইছেন। অর্থ্যাৎ খালেদা জিয়া সরকারের সাথে কোন সমঝোতা ও আপস করবেন না বা প্যারোলে মুক্তি নিবেন না।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য গত এপ্রিল থেকে তিনি রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে।