বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ ও দুর্নীতি » কমলনগরে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের ইন্দ্রনে গরু চুরি হিড়িক
কমলনগরে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের ইন্দ্রনে গরু চুরি হিড়িক
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। গত চার মাসে উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের চর বসু এলাকায় প্রায় ৭০ টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতির সম্মুখিন হয় কৃষক ও অসহায় গৃহস্থ পরিবার। গরু চুরির কারণে কিছু পরিবার নি:স্ব হয়ে পথে বসেছে। শেষ সম্বল হারিয়ে হতাশ হয়ে পাগলের মত বিলাপ করছে। সাধারণ গৃহস্থালি পরিবারগুলো গরু লালন-পালন করে সংসারে আয় বৃদ্ধি করছে। একমাত্র উপার্জন গরু তার দুধ। তবে গরু চুরির পিছনে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী চক্র জড়িত বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।
বিধবা নারী নুর বানু জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর ব্রাক অফিস থেকে কিস্তি নিয়ে একটি গরুর বাচু কিনেন। দীর্ঘ তিন বছর লালন-পালন করেন। কিছুদিন পর বাচ্চা দিবে। কত দার-দেনা করে তাকে নিজের সন্তানের মত বড় করেন। ছেলে-মেয়েদের না খাইয়ে গরুর বাচু বড় করেন। কিন্তু গত বুধবার রাতে কারা যেন তার সন্তান সমতুল্য গরু চুরি করে নিয়ে যান। এতে তার স্বপ্ন আশা সবই নি:শেষ হয়ে যায়। কথা বলছে আর কান্না করছেন। তিনি আর বলেন, গরু বিক্রির টাকায় বড় মেয়েকে বিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন মেয়ের বিয়ে কিভাবে দিবেন। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে।
চর কাদিরার গরু খামারী মো.,শাকিব বলেন, তার গরুর খামার ছিল। কিছু দিন আগে তার বড় জাতের দুটি গরু চুরি। এতে তার তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। তিনি আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে খামার করা ছেড়ে দেন। তিনি খুব আক্ষেপ করেন, এত পাহারা দেয়ার পরও চুরি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি খুবই হতাশ ও আর্থিকভাবে দিশেহারা।
তিনি আরও বলেন, তিনি পেশায় গ্রামের গরুর চিকিৎসক। তার হিসেবে চর কাদিরার পূব-দক্ষিন থেকে ৭০ টির মত গরু চুরি হয়েছে। কৃষক ও অসহায় পরিবারগুলো নি:স্ব। এদের মধ্যে মেঘনার ভাঙনে কবলিত পরিবারও রয়েছে। গ্রামের গরীব কৃষকরা গরু লালন-পালন করে জীবন জীবিকা চালায়। গরু পালন হচ্ছে অনেকে শেষ সম্বল।
স্থানীয়রা জানান, গরু চুরির ঘটনায় চোর ধরে থানায় নেয়া হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন ছবুর খান ছাড়িয়ে নেয়। এতে চুরি রোধ বন্ধ না হয়ে বৃদ্ধি পায়।
স্থানিয়রা আরও জানান, স্থানীয় কিছু চক্র তাদের আতিপত্য বিস্তার করতে কিছু লোক দিয়ে চুরি সহ যাবতীয় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালান। তাদের অত্যাচারে চর বসু এলাকায় অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালা উদ্দিন ছবুর খান বলেন, তিনি মান্নান নামের একলোককে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেন। তবে তিনি চোর কিনা অবগত নন। তবে তদন্ত করে সে দোষী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কমলনগর থানা কর্মকর্তা মেহাম্মদ সোলাইমান বলেন, গরু চুরি বিষয়টি অত্যন্ত দু:খজনক। এতে অহসায় পরিবারগুলোর স্বপ্ন ও আশা নষ্ট হচ্ছে। গরু চুরি রোধে স্থানীয় ও প্রশাসনিক টহল জোরদার করা হবে। সংঘবদ্ধ চোরের দলকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে।
আমু/ডেস্ক/ভী-বাণী