রবিবার, ২৩ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » » ‘গরুচোর’ অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় মা-মেয়েকে বেঁধে বেদম প্রহার
‘গরুচোর’ অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় মা-মেয়েকে বেঁধে বেদম প্রহার
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বয়স্ক মা ও তরুণী মেয়েকে ‘গরুচোর’ আখ্যা দিয়ে নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। পরে কোমরে রশি বেঁধে মা-মেয়েকে প্রকাশ্যে সড়কে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে। শুক্রবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলার হারবাং পহরচাঁদা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সেখানে চেয়ারম্যান নিজেও তাদের আবার প্রহার করেন বলে অভিযোগ ওঠে। নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার ছবি প্রকাশের পর এটি শনিবার জানাজানি হয়। মা ও মেয়ে বর্তমানে চকরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, একদফা মা-মেয়ের ওপর নির্যাতন চলার পর হারবাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) পাঠিয়ে তাদেরকে রশিতে বেঁধে তার কার্যালয়ে এনে আবার নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। উপর্যুপরি নির্যাতন শেষে চেয়ারম্যানের লোকেরাই তদন্তকেন্দ্রে ফোন করে পুলিশ এনে তাদের হাতে মা-মেয়েকে মুমূর্ষু অবস্থায় তুলে দেন।
অসমর্থিত একটি সূত্র জানায়, সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে চোরের অপবাদে পরিবারটিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নিপীড়ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার হারবাং তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার স্থানীয়রা ফাঁড়িতে খবর দিলে আমরা ফোর্স পাঠাই। আমাদের ফোর্স গিয়ে গুরুতর অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসি। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় এক ব্যক্তির দায়ের করা গরু চুরির মামলায় তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে মা-মেয়েসহ চারজনের বাড়ি পটিয়ার শান্তির হাটে। অপরজনের বাড়ি চকরিয়া লালব্রিজ এলাকায়।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।