তিনি কখনো পুলিশ, কখনো সাংবাদিক
যশোর প্রতিনিধি
কখনো পুলিশ, কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও মাদক বিক্রির অভিযোগে সহযোগীসহ আলোচিত রেহেনা ওরফে লিপি (২৫) নামে এক নারীকে আটক করেছে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
রেহেনা ওরফে লিপি চৌগাছা উপজেলার মাশিলা নারায়ণপুর গ্রামের মিঠুর স্ত্রী ও মোহাম্মদ হানিফের মেয়ে। যশোর শহরের রেলগেট এলাকায় তার বসবাস। তার সহযোগীদের কাছ থেকে দুটি ওয়াকিটটি সেট উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃত অন্যরা হলো শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া বিল্লাল মসজিদের পাশের বাবুলের মেয়ে প্রিয়া (২০), শংকরপুর সরকারি মুরগির খামার এলাকার লিটনের ছেলে সোহেল (১৯), রেলস্টেশন এলাকার টুকুর ছেলে বাবু (১৫) এবং আশ্রম রোডের সাহেব বাবুর বাড়ির সামনের সুরুজ মিয়ার ছেলে ওহিদুল (১৪)।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সমির কুমার সরকার জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে সংবাদ আসে, এক নারী মোটরসাইকেল চালিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ায়। তার ইয়ামাহা এফজেড এস ব্রান্ডের মোটরসাইকেলের সামনে প্রেস লেখা আছে। তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই পরিচয় ব্যবহার করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা বিক্রি করে থাকেন। কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে এসে মোটরসাইকেল চালিয়ে যশোরে বিক্রি করে থাকেন। কলগার্ল হিসাবেও তার পরিচিতি আছে।
বুধবার বিকেলে সংবাদ আসে যে, যশোর জিলা স্কুলের সামনে তার সঙ্গীরা কোনো একটি অপরাধ করার জন্য দাড়িয়ে আছে। সেখানে গিয়ে প্রিয়া, সোহেল, বাবু ও ওহিদুলকে আটক করা হয়। সোহেলের কাছ থেকে একটি ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে। সে ওই ওয়াকিটকি রেহেনা ওরফে লিপির কাছ থেকে পেয়েছে।
সোহেল পুলিশকে জানায়, রেহেনা আপা প্রেসক্লাবের সদস্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রেহেনা নামে প্রেসক্লাবের কোনো সদস্য নেই এমন তথ্য পেয়ে পুলিশি জেরার মুখে জানায় ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে একটি প্রেসক্লাব আছে। ওই ক্লাবে থাকেন। পুলিশ সোহেলের উল্টোপাল্টা তথ্য পেয়ে তাকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে রেহেনাকে আটক করা হয়।
পরিদর্শক সমির কুমার সরকার আরো জানিয়েছেন, রেহেনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার কাছ থেকে যশোর থেকে প্রকাশিক ‘সাপ্তাহিক স্মৃতি’ নামে একটি পত্রিকার পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। সে ওই ওয়াকিটকি সেট একটি অনলাইন থেকে কিনেছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশকে জানিয়েছে। কিন্তু ওয়াকিটকি কেনার জন্য পুলিশের কোনো অনুমোদন লাগে কি-না তা যাচাই করা হচ্ছে। তার কাছে পুলিশের পেশাক পরিহিত একটি ছবি পাওয়া গেছে। তবে পোশকটি ভারতীয় পুলিশের বলে মনে হচ্ছে। ভারতীয় কোনো ছবির মাথা কেটে নিজের ছবি জুড়ে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
পুলিশ আরো জানায়, রেহেনা ওরফে লিপি চৌগাছা সীমান্ত থেকে ফেনসিডিল ও কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে আসে। বছর খানেক আগে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার একজন ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে লিপিকে আটক করা হয়। একজন কলগার্ল হিসাবেও তার পরিচিতি আছে বলে শুনেছি। ওয়াকিটকি দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণঅ করে থাকে লিপি ও তার সহযোগীরা। তাদেরকে সাথে নিয়ে আরো বেশ কয়েক জায়গায় অভিযান চালানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কোনো মামলা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি জানিয়েছেন, উর্ধতন কর্মকর্তদের সাথে কথা বলে রাতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।