শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » » পৌরসভা, ইউপি ও সিটি কর্পোরেমনের নাম বদলে যাচ্ছে-আসছে নতুন নাম ও পদবী -ইসি
পৌরসভা, ইউপি ও সিটি কর্পোরেমনের নাম বদলে যাচ্ছে-আসছে নতুন নাম ও পদবী -ইসি
বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার কতৃক নির্বাচিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জনপ্রতিনিধিদের বিদ্যমান পদবি বদলে যাচ্ছে। এদের জনপ্রতিনিধি পদবি বাংলায় রূপান্তর করা হচ্ছে। এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে ইসি।
আগামী দিনে মেয়র, কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান পদবিগুলো থাকছে না। বদলে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নামও। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন, ২০২০-এর বিধান সংশোধনে এ প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) থেকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন সংক্রান্ত বিধান আলাদা করে এ আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়া আইনটি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চেয়েছে কমিশন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বলেন, আমরা আইনের খসড়ায় সবার মতামতের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ছাড়াও দেশের যেকোনো নাগরিক এ আইনের ওপর মতামত দিতে পারবেন। মতামত পাওয়ার পর আইনে সংযোজন-বিয়োজনের বিষয়ে ইসি সিদ্ধান্ত নেবে।
আরপিওর অনুচ্ছেদ ৯০-এ থেকে ৯০-আই-এ রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও নিবন্ধন বাতিল সংক্রান্ত বিধান রয়েছে। নির্বাচন কমিশন ওই অনুচ্ছেদ রছিত করে আলাদা আইন করার প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে। এর খসড়ায় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল থেকে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি রাখা হয়েছে। আরপিওতে শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতার বিষয় উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই।
প্রস্তাবিত ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন-২০২০’-এর খসড়ার সংজ্ঞায় ইউনিয়ন পরিষদকে ‘পল্লী পরিষদ’, পৌরসভাকে ‘নগরসভা’ ও সিটি করপোরেশনকে ‘মহানগর সভা’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে প্রধান, ভাইস চেয়ারম্যানকে উপপ্রধান; সিটি করপোরেশনের ‘মহানগর সভা আধিকারিক’ বা ‘মহানগরপতি’ এবং পৌরসভার মেয়রকে ‘পুরাধ্যক্ষ’ বা ‘নগরপতি’; সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কাউন্সিলরকে ‘সদস্য’ বা ‘পারিষদ’, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার ওয়ার্ডকে ‘মহল্লা’ এবং ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষেত্রে ‘এলাকা’ শব্দে প্রতিস্থাপন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন দল নিবন্ধন পেতে অন্তত দুটি নির্বাচনে একটি করে আসনে জয় পাওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে একটি নির্বাচনের একটি আসনে জয় পেলেই নিবন্ধনের জন্য বিবেচিত হয়। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখার বিধান শিথিল করা হয়েছে খসড়া আইনে। বিদ্যমান আইনে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখার শর্ত রয়েছে। খসড়া আইনে কত বছরের মধ্যে এ শর্ত পূরণ করতে হবে, সেই বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে তাদের কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণ অধ্যাদেশ বাংলায় প্রণয়নে আগ্রহের কথা জানিয়েছিল।
এ বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক কাজও সম্পন্ন করা হয়। ইংরেজি ভাষার এসব আইন বাংলায় অনুবাদ করে একটি খসড়া প্রস্তাবও তৈরি করা হয়।পরিকল্পনা হয়, কমিশন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ায় যেসব বিদেশি শব্দ আছে, তাও বাংলায় রূপান্তর করা হবে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আইনের এই খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত চাওয়া হয়েছে। ৭ জুলাই পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিবের ই মেইল secretary@ecs.gov.bd ঠিকানায় মতামত পাঠানো যাবে।
সংকলিত -