বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » করোনায় প্রায় আড়াই লাখ মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৩ লাখ
করোনায় প্রায় আড়াই লাখ মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৩ লাখ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ লাখ ছাড়িয়েছে। আর এ মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৮ হাজারে। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে ১৯ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ লাখ ৩৫৫ জন।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার এর হিসেব অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ২৮ হাজার ২২৪ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখ ২০ হাজার ২৬৮ জনে। ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ লাখ ৩৫৫ জন।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ৬০ হাজার ৮৭৬ জন। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যাও বিশ্বে সর্বোচ্চ ১০ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫১ জন।
মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২৭ হাজার ৬৮২ জন। আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ৫৯১ জন।
করোনাভাইরাসের মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ১৬৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪৪১ জন।
স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজার ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৩৬ হাজার ৮৯৯ জন।
ইউরোপেরই অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ১২১ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৪৩ জন।
অন্যদিকে করোনা ভাইরাসজনিত রোগ থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে সেরে উঠেছে ৭৭ হাজার ৬১০ জন। যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১, স্পেনে ১ লাখ ৩২ হাজার ৯২৯, ইরানে ৭৩ হাজার ৭৯১ জন, ইতালিতে ৭১ হাজার ২৫২ এবং ফ্রান্সে ৪৮ হাজার ২২৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে। ইউরোপের দেশ জার্মানিতে ১ লাখ ২০ হাজার ৪০০ জন মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এ ছাড়া তুরস্কে ৪৪ হাজার ৪০, ব্রাজিলে ৩৪ হাজার ১৩২, সুইজারল্যান্ডে ২২ হাজার ৬০০ জন, কানাডায় ২০ হাজার ৩৩২, অস্ট্রিয়ায় ১২ হাজার ৭৭৯, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৭ হাজার ৯২২, বেলজিয়ামে ১১ হাজার ২৮৩ ও অস্ট্রেলিয়ায় ৫ হাজার ৬৮৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বুধবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ১০৩ জন। তাদের মধ্যে ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫০ জন।
প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।