যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ। শনিবার বেলা ১১টায় যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। কংগ্রেসের উদ্বোধন করবেন ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
বিশেষ অতিথি হিসাবে ভারতীয় যুব সমাজের একজন নেতাসহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থাকবেন। কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় কংগ্রেস প্রস্তুতির আহ্বায়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য চয়ন ইসলাম। সদস্য সচিব ও সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ পরিচালনা করবেন। সম্মেলন মঞ্চে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। বাকিরা মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলে নির্দিষ্ট আসনে বসবেন।
তবে বর্তমান কমিটির যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীসহ বাকি বিতর্কিত নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হয়নি।
সবশেষ ২০১২ সালের ১৪ জুলাই যুবলীগের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর কংগ্রেস হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ প্রায় সাড়ে সাত বছর পর সপ্তম কংগ্রেস হতে যাচ্ছে। কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকা চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছে। কংগ্রেসের মূল মঞ্চ নির্মিত হয়েছে পদ্মাসেতুর আদলে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সারাদেশের ৭৭টি সাংগঠনিক জেলা ও আটটি সাংগঠনিক জেলার মর্যাদাসম্পন্ন বৈদেশিক শাখার প্রায় তিন হাজার কাউন্সিলর, ২৫ হাজার ডেলিগেটস ও আট হাজার অতিথি মিলিয়ে অন্তত ৩৬ হাজার মানুষ কংগ্রেসে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
যুবলীগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিশ্রুতিশীল যুব নেতৃত্বের হাতেই সংগঠনের গুরুভার তুলে দেয়ার লক্ষ্যে এবার কংগ্রেসে যুবলীগের বয়সসীমা ৫৫ বছর করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, যুবলীগের চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক বা অন্য কোনো পদে বিতর্কিতদের স্থান হবে না। ‘পরিচ্ছন্ন’ ভাবমূর্তির ও ভবিষতে স্বচ্ছতা ধরে রাখতে সক্ষম হবেন এমন কাউকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে। আর দলের নেত্রী শেখ হাসিনাই শেষ কথা বলবেন।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কংগ্রেসের প্রস্তুতি ও মঞ্চ পরিদর্শনের আওয়ামী লীগ নেতারাসহ সংগঠনের নেতাদের পাশে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল মনির ছেলে শেখ ফজলে শামসের (পরশ) উপস্থিত সাড়া ফেলে দেয়। তিনি এতদিন শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত থেকে রাজনীতিক পরিবারের সন্তান হয়েও প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী রাজনীতির বাইরে ছিলেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের শীর্ষ দুই পদের নেতৃত্ব সমন্বয়ে কেবল ভাবমূর্তিতে স্বচ্ছ নয়, রাজপথের নির্ভীক ও সাহসী নেতৃত্বের বিষয়টিও মাথায় রেখে নেতৃত্ব উপহার দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কেন্দ্রীয় কমিটিতে এক ঝাঁক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গ্রহণযোগ্য যুবকদের নেতৃত্ব থাকবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। সেই ছকেই শনিবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ নেতৃত্ব উপহার পেতে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যুবকদের সংগঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যুবলীগ গঠন করেন তার ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি। ১৯৭৪ সালে যুবলীগের প্রথম কংগ্রেসে তিনিই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
সর্বশেষ ২০১২ সালে ষষ্ঠ কংগ্রেসে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান শেখ মনি ও শেখ সেলিমের ভগ্নিপতি ওমর ফারুক। তারপর ছয় বছর নির্বিঘ্নে কাজ করে এলেও সম্প্রতি ক্যাসিনোকাণ্ডে বড় ধাক্কা খান ওমর ফারুক; সেই সঙ্গে সমালোচনায় নাকাল হয় যুবলীগ।