সেলিম প্রধানের থাবা সওজের জমিতেও
অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার হোতা সেলিম প্রধান সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ১০ শতাংশ জমি দখল রাখায় পাঁচ বছর ধরে আটকে আছে রূপগঞ্জের ভুলতা উড়ালসেতুর মুখের সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ। এর ফলে উড়ালসেতুর অপর প্রান্তে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি এক লেনে পরিণত হয়েছে এবং নিত্য যানজটের কারণ হয়ে উঠেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিভিন্ন সভায় আলোচনা ও অনেক দেনদরবার করেও ওই জমি উদ্ধার করতে পারেনি সওজ।
অবৈধ দখলের কারণে পাঁচ বছর ধরে আটকে আছে ভুলতা উড়ালসেতুর মুখের সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার সাওঘাট এলাকায় জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস নামে সেলিম প্রধানের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভুলতা থেকে শুরু হয়ে উড়ালসড়কটি গিয়ে নেমেছে সাওঘাটে। সেখানে সড়কের জায়গা দখল করে সেলিম প্রধানের প্রতিষ্ঠান ১২০ ফুট লম্বা সীমানাদেয়াল তৈরি করেছে। ফলে নকশা অনুযায়ী উড়ালসেতুর ওই অংশে আর দুই লেন সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক বিভাগ জমি দখলমুক্ত করতে আবেদন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রভাবশালী বলে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, জায়গাটির দখল টিকিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে সীমানাদেয়ালের ভেতর কবরস্থান ও নামাজঘর নির্মাণ করেছেন সেলিম প্রধান। বিভিন্ন সময় উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তখন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে সওজের কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন সেলিম প্রধান।
সওজের নারায়ণগঞ্জ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম গতকাল এ প্রতিবেদককে বলেন, সওজের ১০ শতাংশ জমি সেলিম প্রধানের প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে, যার কারণে ভুলতা উড়ালসেতুর মুখের সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। দীর্ঘদিন পর এলাকার সাংসদ এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নির্দেশে ওই জমি থেকে অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ব্যাংককগামী একটি ফ্লাইট থেকে অনলাইন ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধানকে নামিয়ে আনে র্যাব। তাঁকে আটকের পর তাঁর অফিস ও বাসায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি মুদ্রা, ১২টি পাসপোর্ট, ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক, ৪৮ বোতল বিদেশি মদ, একটি বড় সার্ভার, চারটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে।