১১ রেস্তোরাঁর মালিক এই নারী!
বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা ৪০ বছরের জয়ন্তী কাঠালে পেশায় ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু এই চাকরি করে তিনি সময় দিতে পারতেন না নিজের সন্তানকে। ছেলের স্কুলের হোমওয়ার্ক থেকে তাকে দেখাশোনা, কোনও দায়িত্বই সে ভাবে নিতে পারতেন না। মানসিক ভাবে ভীষণ ভেঙে পড়ছিলেন। তারপরই একদিন সিদ্ধান্ত নেন, চাকরি ছেড়ে ফুড হোম ডেলিভারি শুরু করার।
সেই জয়ন্তী আজ বিশ্ব জুড়ে ১১ রেস্তোরাঁর মালিক!
মহারাষ্ট্রে এক মরাঠি পরিবারে জন্ম জয়ন্তীর। একান্নবর্তী পরিবারে জন্মানো এই নারীর ছোট থেকেই রান্নার প্রতি ঝোঁক ছিল। জয়েন্ট ফ্যামিলি হওয়ায় তাদের পরিবারে একসঙ্গে অনেকটা রান্না করতে হত। তাই পরিবারের ছোট-বড় সকলেই রান্নার কাজে হাত লাগাতেন।
বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে শিফট করেন জয়ন্তী। তার হোম ডেলিভারি ব্যবসার শুরু বিদেশে। ২০০৬ সালে অফিস থেকে তাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয়। সেখানে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। তার অন্যান্য ভারতীয় সহকর্মীরাও একই সমস্যার কথা শেয়ার করেছিলেন। সেই প্রথম হোম ডেলিভারির কথা মাথায় আসে জয়ন্তীর। অরকুটে নিজের একটা প্রোফাইল বানিয়ে তাতে নির্দিষ্ট মেনু লিখে খাবারের হোম ডেলিভারির জন্য অর্ডারের বিজ্ঞাপন দেন তিনি।
প্রথম দিনই দারুণ সাড়া পান জয়ন্তী। বাড়ির খাবার বহু ভারতীয় সহকর্মী অর্ডার দেন। কর্মসূত্রে দু’বছর অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন তিনি। এই দু’বছরই সেখানে হোম ডেলিভারি করেছেন জয়ন্তী। বিভিন্ন উত্সবে মরাঠি মিষ্টি বানিয়েও হোম ডেলিভারি দিতেন তিনি। দু’বছর পর বেঙ্গালুরুতে ইনফোসিসের প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসাবে যোগ দেন তিনি। প্রজেক্ট ম্যানেজার হওয়ার পাশাপাশি নিজের হোম ডেলিভারিও চালিয়ে যাচ্ছিলেন জয়ন্তী।
বেঙ্গালুরুর এইচএসআর আউটলেটে ২০১২ সালে প্রথম তিনি তার রেস্তোরাঁর শাখা খোলেন। তার রেস্তোরাঁর নাম ‘পূর্ণব্রহ্ম’। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে এই রেস্তোরাঁ খোলেন তিনি। পরে মুম্বই, পুণে, অমরাবতীতেও তার ব্যবসা ছড়িয়ে যায়। বর্তমানে ভারতে ছ’টা শাখা রয়েছে জয়ন্তীর। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন, লন্ডন, টরন্টো, শিকাগোতেও তার রেস্তোরাঁর শাখা রয়েছে।
তবে তার ব্যবসার একটা শর্ত রয়েছে। শুধুমাত্র মহিলাদেরই তিনি ফ্রাঞ্চাইজি দিয়ে থাকেন। মহিলাদের স্বনির্ভর করার উদ্দেশেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন জয়ন্তী। প্রতিটা শাখার ৭০ শতাংশ কর্মীও মহিলাই।