ভাঙনের মুখে ভারত?
অনলাইন ডেস্ক
স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মনিপুরের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। লন্ডনে একটি প্রবাসী সরকারও গঠন করেছে তারা। দীর্ঘদিন ধরেই ভারত থেকে আলাদা হওয়ার সংগ্রাম করে আসছে মনিপুর রাজ্য। আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। ভারতের সবচেয়ে ছোট রাজ্যগুলোর একটি মনিপুর। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাজ্যটির জনসংখ্যা ২৮ লাখ। ‘সেভেন সিস্টার্স’ হিসেবে পরিচিত পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের একটি মনিপুর।
ভারতের স্বাধীনতা লাভের দুই বছর পর ১৯৪৯ সালে মনিপুর ভারতের সাথে যুক্ত হয়। তবে বহু বছর ধরেই রাজ্যটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা চলছে। তাদের এই স্বাধীনতার ঘোষণা ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোকে উস্কে দিতে পারে। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে ভারত কি ভেঙে যাচ্ছে।
১৯৪৭ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় মনিপুর ছিল প্রিন্সলি স্টেট বা রাজা শাসিত স্বতন্ত্র অঞ্চল। এর দুই বছরের মাথায় ১৯৪৯ সালে অঞ্চলটি ভারতের নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে তখন থেকেই স্বাধীনতার দাবিতে সেখানে আন্দোলন চলছে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ‘প্রবাসী মনিপুর সরকার’ গঠনের ঘোষণা আসে। লন্ডনে বসবাসরত দুই মনিপুরি নেতা ইয়ামবিন বিরেন ও নরেংবাম সমরজিত এ ঘোষণা দেন।
লন্ডনের প্রবাসী সরকারের নাম দেওয়া হয়েছে মনিপুর স্টেট কাউন্সিল। কাউন্সিলের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে ইয়ামবিন বিরেন-কে। আর পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন নরেংবাম সমরজিত। তারা দুইজনই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের অন্যতম ছোট রাজ্য মনিপুর। সেখানকার জনসংখ্যা মাত্র ২৮ লাখ। সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের একটি মনিপুর। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় এর অবস্থান।
রাজ্যটিতে স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে লড়াই করছে শতাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা বিভিন্ন মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন দাবি করে আসছে। স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর লড়াইজনিত সহিংসতা মনিপুরের বাসিন্দাদের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাগা, কুকি, পাঙ্গালসহ নানা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বাস এই রাজ্যে। এসব গোষ্ঠী নিজেদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে চায়।
লন্ডনে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সমরজিত বলেন, আমরা সেখানে স্বাধীন নই। আমাদের ইতিহাস ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে, আমাদের সংস্কৃতি বিলুপ্ত হতে চলেছে। সেই কারণে জাতিসংঘকে আমাদের বক্তব্য শুনতে হবে। সারা বিশ্বের কাছে জোরালোভাবে বলছি, মনিপুরে বসবাস করা জনগোষ্ঠীও মানুষ।