শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » বিবিধ » মাছ ঘাটে আধিপত্য বিস্তারে কমিশন বানিজ্য, গদি ব্যবসায়ীরা আতংকে
মাছ ঘাটে আধিপত্য বিস্তারে কমিশন বানিজ্য, গদি ব্যবসায়ীরা আতংকে
রামগতি-কমলনগর(লক্ষ্মীপুর)সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীতে জেলেদের পিডাইন্না জাল(বেড় জাল) নিয়ন্ত্রন, জেলে-গদি কমিশন, জেলে সিরিয়াল, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ উঠে আওয়ামীলীগ নেতা মফিজ মাতাব্বরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। মফিজ মাতাব্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে। কিছু গদি ব্যবসায়ী ঝুট-ঝামেলার কারণে পাইকারি-খুচরা মাছ বিক্রি করতে পারছে না।
এরআগে, সরকার পতনের পূর্বে মাছ ঘাটের একাধিক নিয়ন্ত্রণে ছিলেন আবুল খায়ের, মো.জিহাদ। ঘাটের আধিপত্য বিস্তারে কিছু বিক্ষিপ্ত মারামারি ঘটনাও ঘটছে। কালু মাঝি- জামাল মাঝির লোকজনের মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
স্থানীয় মাছ ঘাটের তথ্যমতে জানান, নদীতে পিডাইন্না জাল(বেড় জাল) নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। প্রতিদিন একটি পিডাইন্না জালে লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। ৫-৬টা পিডাইন্না জালে প্রায় ৪-৬লাখ টাকার মাছ বিক্রি করছে। এতে ঘাটে থাকা নিয়ন্ত্রিত আড়তদারগণ শতকরা ২০শতাংশ টাকা কমিশন নেন। এদের আধিপত্য বিস্তারে কিছু সাধারণ ঘাট ব্যবসায়ী ঝামেলায় আতংকে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকার পতনের পর বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী ঘাটের নিয়ন্ত্রনে থাকার গুনজন উঠে। তবে ঘাট নিয়ন্ত্রনে বিএনপির কোন নেতা-কর্মীর সত্যতা পাওয়া যায়নি। দলীয় সূত্রে জানান, ঘাটের নিয়ন্ত্রনে থাকার অভিযোগে যুবদল নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। এবং দলীয় অনিয়ম ও আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ পেলে দলীয় সিদ্ধান্তে নেতা-কর্মীদের বহিষ্কারের নির্দেশনা রয়েছে।
কালু মাঝি জানান, সরকার পতনের পর ঘাট নিয়ন্ত্রন করেন মফিজ মাতাব্বর, খলিল মেম্বার, মনির মেম্বার, মো.বাবুল, আকতার, আজাদ মাতাব্বর, আলমসহ কিছু লোক। তাদের সিদ্ধান্তে নদীতে পিডাইন্না জাল(বেড়জাল) ফেলতে যান মাঝিরা। মাতাব্বর হাট মাছ ঘাটে ভোলার দৌলুতখাঁর ৫-৬ টা পিডাইন্না জাল গত কয়েক বছর মাছ ধরছে। প্রতিদিন একটা জালে প্রায় ৮০-৯০হাজার টাকা মাছ বিক্রি হয়। নদীতে পিডাইন্না জালের কমিশন নিয়ে যত ঝামেলা হচ্ছে। প্রতিটি জাল থেকে ১০-১৫শতাংশ কমিশন দিতে হচ্ছে।
কালু মাঝি আরও জানান, নদীতে পিডাইন্না জাল দিয়ে মাছ ধরতে গেলে হঠাৎ জামাল মাঝি আমার নৌকা ও জালের সামনে তার নৌকা ও জালে ফেলে। এতে বাঁধা দিলে জামাল মাঝি তার লোককজন ঘাটে আসলে অতংকিত হামলা করতে থাকে। এতে আমিসহ আরও ৮জন আহত হন। গুরুতর আহত একজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ইব্রাহিম খলিল মেম্বার জানান, ঘাটের কোন নিয়ন্ত্রনে তিনি নেই। মো.জিহাদের গদিতে থাকা আলমের নেতৃত্বে ঘাটে ঝামেলা হচ্ছে। জামাল মাঝির লোকজন ঘাটে কালু মাঝির উপর হামলা করে। মফিজ মাতাব্বর জানান, নদীতে ৫-৬টা পিডাইন্না(বেড়জাল) জিহাদের আড়তের থাকা আলমসহ আমরা ৬-৭জন নিয়ন্ত্রন করেন।
জামাল মাঝি জানান,তিনি দীর্ঘদিন নদীতে মাছ ধরে জীবিকা চালান, হঠাৎ ঘাটে নিয়ন্ত্রণে থাকা মফিজ মাতাব্বর, খলিল মেম্বারাসহ অন্যরা তাকে জাল ফেলতে দিচ্ছে না। নদীতে গেলে তাদের কমিশন দিতে হয়। আমি স্থানীয় হওয়ায় তাদের ২০শতাংশ কমিশন দিচ্ছি না। যার কারণে তারা আমার জালের সিরিয়াল দেয় না। ভোলার পিডাইন্না জাল(বেড়জাল) মাঝিরা ২০শতাংশ কমিশন দিয়ে নদীতে মাছ ধরেন।
স্থানীয় জৈনিক ব্যক্তি জানান, সরকার পতনের আগে ঘাটের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন আবুল খায়ের চেয়ারম্যান- মো.জিহাদ। তারা এখন নেই। আধিপত্য বিস্তার ঘাটের নিয়ন্ত্রনে স্থায়ী আওয়ামী লীগের নেতারা রয়েছে। তারা যেভাবে চাচ্ছে সেভাবে ঘাট নিয়ন্ত্রন হচ্ছে। এদিকে উপজেলার পাটোয়ারীর হাট মাছ ঘাটে দু’পক্ষের আধিপত্য বিস্তারে ঘাটে গদি ব্যবসায়ীরা আতংকে রয়েছে।
মো.জিহাদ জানান, পিডাইন্না জাল (বেড়জাল) ও জেলেদের নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি সবই ছিল। হঠাৎ সরকার পতনের পর যাদের নাম এসেছে তারা ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা জেলে ও আড়তদার থেকে শতকরা মাঝি-(১০%, গদি আড়ত১০%) ২০শতাংশ কমিশন নিচ্ছে। তবে ঘাটের ব্যবসার সাথে তিনি এখন জড়িত নন। কমলনগর থানা ইনচার্জ(ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান,ঘাটের নিয়ন্ত্রন বা হামলার ঘটনার কোন অভিযোগ পাননি।
ভী/ডেস্ক/