বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » অপরাধ ও দুর্নীতি | প্রশাসন » ইউপি সদস্য হয়ে সেজে গেলেন চেয়ারম্যান..! দেন কাগজপত্রে সই সীল
ইউপি সদস্য হয়ে সেজে গেলেন চেয়ারম্যান..! দেন কাগজপত্রে সই সীল
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : চলমান দেশের পরিস্থিতিতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পলাতক রয়েছেন৷ এরপর নতুন সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ফারুক হোসাইন৷
কিন্তু হঠাৎ করে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মুঃ কাউসার হামীদ। এরপর নাগরিকত্বসহ বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর করা শুরু করেন প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে। কিন্তু নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যা অবৈধ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রে স্থায়ীরা জানান, নিয়মবহির্ভূত কাউসার হামীদের স্বাক্ষরের ফলে ইউনিয়নের লোকজনের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। তিনি হঠাৎ বিভিন্ন দাপ্তরিক কাগজপত্রে সই সীল ব্যবহারে চেয়ারম্যান বনে গেলেন।
নতুন বিধিমালা সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান বা কোন প্যানেল চেয়ারম্যান পরিষদে উপস্থিত না থাকলে সেক্ষত্রে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রয়েছে। স্বঘোষিত কেউ নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান দাবি করার নিয়ম নেই।
জানা গেছে, মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পরপরই ইউপি সদস্যদের ভোটে চেয়ারম্যান প্যানেল ১, ২ ও ৩ গঠন করা হয়। প্যানেল-১ হিসেবে ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফারুক হোসাইন, প্যানেল-২ হিসেবে ৬ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন এবং প্যানেল-৩ হিসেবে ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য তাজনাহার বেগমকে মনোনীত করা হয়।
২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল ওই প্যানেলের অনুমোদন দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্যানেল চেয়ারম্যানদের নামও পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে এর অনুলিপিও দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই চেয়ারম্যানের অবর্তমানে প্যানেল চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
পরিষদে চেয়ারম্যান প্যানেল-১ ফারুক হোসাইন বলেন, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতে গত কয়েকদিন ধরে প্যানেল-১ হিসেবে পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ করে ইউপি সদস্য মুঃ কাউছার হামীদ নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পরিষদের কাগজপত্রে সীল স্বাক্ষর করছেন। এতে স্থানীয়ভাবে ও পরিষদের মেম্বারদের মধ্যে সমালোচনা ও বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
ইউপি সচিব মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য মু: কাউসার হামীদ প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট দফতরে একটি চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি স্বাক্ষর করার অনুমতি পাননি৷
এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য কাউছার হামীদের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি এ সংক্রান্ত কোন কথা বলতে রাজি হননি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, ইউপি চেয়ারম্যান যদি অনুপস্থিত থাকে, তাহলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব পালন করবে। তিনিও যদি অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ দায়িত্ব পালন করবেন। কোন প্যানেল চেয়ারম্যান যদি উপস্থিত থাকতে না পারেন সেক্ষেত্রে সেখানে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই অন্যকোন ইউপি সদস্য প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে স্বাক্ষর করার বিধান নেই। কেউ স্বাক্ষর করলেও ওই সাক্ষরের কোন মূল্য নেই।
তিনি আরও জানান, মান্দারী ইউনিয়নের উদ্বৃত্ত পরিস্থিতির বিষয়টি শুনেছি। প্যানেল চেয়ারম্যানের বাহিরে অন্য কোন ইউপি সদস্য যাতে প্যানেল চেয়ারম্যান দাবি করে স্বাক্ষর না করে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আমু/ভী-বাণী/ডেস্ক