বুধবার, ২৮ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রশাসন » বন্যায় ত্রান সহায়তায় মানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে ইউএনও সুচিত্র
বন্যায় ত্রান সহায়তায় মানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে ইউএনও সুচিত্র
আমজাদ হোসেন আমু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
টানা বৃষ্টি ও বন্যায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে পানিতে প্লাবিত চর কাদিরা ইউনিয়নের ২৫হাজার জনগন। এরা গত ৪০দিন পানিতে আটকা পড়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। কোমড় পরিমান পানিতে ঘরে বন্দী হয়ে খাবার, ঔষধ, বিশুদ্ধ পানি সংকটে ভুগছেন। এসব পানিবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রন্জন দাস। তিনি কোমড় নয় গলা পরিমান পানিতে সাঁতরিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ত্রান বা খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। গত কিছু দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেইজবুক) তার পানি, নৌকা এবং রাতে বিভিন্ন অজপাড় গ্রামে পানি বন্দি মানুষের খোঁজ ও খাবার পৌঁছানোর ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি বন্যা কবলিত এলাকা তিনি পরিদর্শন করেন।
ফেইজবুক ওয়ালে দেখা যায়, তার কিছু মানবিক ছবি, কখনো তিনি ফ্লোর বসে পেয়াজ, আলু, চাল প্যাকেট করছেন; কখনো নৌকা নিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ত্রান নিয়ে যাচ্ছে; কখনো নৌকা চালিয়ে ত্রান নিচ্ছেন;কখনো হাটু পরিমান পানিতে হেঁটে হেঁটে ত্রান এবং পানিবন্দি মানুষের খবরা-খবর নিচ্ছেন। কখনো আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের জন্য রান্না খিচুরি, বিশুদ্ধ পানিকরণ ঔষধ দিচ্ছেন। বৃষ্টিতো ভেজা অসংখ্য ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে।
নোমান হোসেন লিখেন, “আমাদের একজন মানবিক ইউএনও স্যার আছেন কমলনগর উপজেলাতে, স্যার সবসময় দূর্যোগমূহুর্তে এভাবে মানুষের সাথে মিশে যান। স্যার ইচ্ছে করলে নৌকা ব্যাবহার করতে পারতেন কিন্তু করেন নি, কারণ নৌকা ব্যাবহার করলে মানুষের কষ্টটা অনুভব করতে পারতেন না। আল্লাহ স্যারকে উত্তম যাযা দান করুক”
শামসুল আলম নিশাদ লিখেন, “দেখেন উনি কমলনগরের ইউএনও স্যার। লক্ষীপুরে আরো ৫ জন ইউএনও আছে। উনি সবার চেয়ে আলাদা। চলমান কয়েক দিন বন্যা কবলিত মানুষের পাশে সকাল বিকাল রাত নিরলস কাজ করে আসছেন। আপনারা দোয়া করেন স্যার যেন দুর্যোগ পরর্বতী সময় আমাদের সাথে থাকতে পারে। স্যারকে আমরা আরো ১ বছর আমাদের ইউএনও হিসাবে চাই”
মাকসুদুর রহমান লিখেন, “কমলনগরের UNO মহোদয় রাত ব্যাপি আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে বানভাসি মানুষের খোজ খবর নিচ্ছে” তিনি আরও জানান, দেশের প্রতিটি থানায় ইউএনও রয়েছে। তবে উনার মত কাজ কেউ করেনি।
ফেইজবুকের ওয়াল ঘুরে আরও একাধিক মানবিক লেখা চোখে পড়ল। এভাবে উপজেলা নির্বাহীরা কাজ করে না। তিনি সত্যিই মানবিকতার পরিচয় দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রন্জন দাস জানান, আমরা মানুষ, আমাদের পরিচয় আমরা মানুষ দেশের জন্য কি করতে পারি। আমাদের উচিত সবশ্রেণি পেশা মানুষের জন্য কাজ করা। বন্যা কবলিত মানুষ খুবই অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়ানো সবার দায়িত্ব। আমি ইউএনও হিসেবে নয়, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মানবিকতা বিবেচনায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। নিজের চোখে মানুষের আকুতি না দেখলে বুঝতে পারতাম না অসহায়ত্ব কি..। বন্যা কবলিত ভোগান্তিগুলো বুঝার চেষ্টা করেছি। জানি না কতটুকু করতে পেরেছি। সবার সহযোগিতা কামনা করছি।