অনশনে বসছেন ছাত্রদলের বিবাহিত নেতারা
নিজস্ব প্রতিবেদক :ছাত্রদলের নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখার দাবিতে অনশনে বসবেন সংগঠনটির বিবাহিতনেতা-কর্মীরা। দাবি আদায়ে বুধবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশন শুরু করবেন তারা। এর মাঝে দুপুর ১টায় নিজেদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
মঙ্গলবার ঢাকায় অর্ধশতাধিক বিবাহিত নেতা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছাত্রদলের বিগত কেন্দ্রীয় কমিটির স্কুলবিষয়ক সম্পাদক আরাফাত বিল্লাহ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, তাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। আরাফাত বিল্লাহ ছাত্রদলের বিগত কাউন্সিলে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র উঠালেও বিবাহিত হওয়ার কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।
গত১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলে ফজলুর রহমান খোকন সভাপতি এবং ইকবাল হোসেন শ্যামল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তবে ওই কাউন্সিলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। একটি হলো- নির্বাচনে বিবাহিতরা প্রার্থী হতে পারবেন না। অন্যটি হলো-প্রার্থীরা কাস্টিং ভোটের ১০ শতাংশ না পেলে পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তারা স্থান পাবেন না। নির্বাচনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে ২৮ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করলেও মাত্র ৬ জন দশ শতাংশের বেশি ভোট পান।
ছাত্রদলের একাধিক বিবাহিত নেতা দাবি করে, ছাত্রদলের কাউন্সিলে শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবাহিতরা প্রার্থী হতে পারবেন না বলে শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে তখন কোনো শর্ত দেয়া হয়নি। এখন দুই সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি যখন পূর্ণাঙ্গ করা হচ্ছে, তখন এই ইস্যুটি সামনে আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা ছাত্রদলের কাউন্সিলে দায়িত্বপালনকারী সংগঠনটির সাবেক নেতাদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি। তারা (সাবেক নেতারা) আমাদের বলেছেন, ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনার ওই কমিটি পরবর্তীতে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ডাকলে তখন বিষয়টি তাকে বলবেন।
বিবাহিত নেতারা আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে তারা ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথেও আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করেছেন। তারা দুইজনই এ ব্যাপারে নেতিবাচক। তারা (খোকন-শ্যামল) বলেছেন, লন্ডনে কথা বলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানকে রাজী করাতে পারলে বিষয়টিতে তাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।
বিবাহিত একজন নেতা বলেন, আমরা জেনেছি- ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইতোমধ্যে পঞ্চাশের কম সদস্য বিশিষ্ট একটি আংশিক কমিটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছেন। সেখানে বিবাহিত কাউকেই রাখা হয়নি।
এর আগে গত ৩ জুন রাজীব-আকরামের নেতৃত্বাধীন ছাত্রদলের বিগত কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিয়ে বয়সসীমা নির্ধারণ করে কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এর প্রতিবাদে অতীতের ধারাবাহিকতায় বয়স্কদের দিয়ে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে আন্দোলনে নেমে সংগঠনটির ১২ নেতা বহিষ্কৃত হলেও এখনো প্রত্যাহার হয়নি তাদের বহিষ্কারাদেশ।