রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » রাজনীতি | সারাদেশ » লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদের মোশারেফ
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদের মোশারেফ
আমজাদ হোসেন আমু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে নৌকা মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মহাজোটের প্রার্থী (জাসদ ইনু) মো.শোশারেফ হোসেন। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে মহাজোটের শরিকদলের একান্ত বৈঠকে মো. মোশারেফ হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়। এরআগে,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলীকে দল নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আ’লীগ নেতা জানান, লক্ষ্মীপুর-৪ আসনটি মেঘনার ভাঙনে কবলিত। দীর্ঘ সময় ধরে এখানে জোটের প্রার্থীদের আনাগোনা রয়েছে। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিকল্পধারা বাংলাদেশ এর মহাসচিব বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর(অব)আব্দুল মান্নানকে নৌকা প্রতিক দেয়া হয়ে ছিল। এবারও জোটের প্রার্থীর নাম ঘোষনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতিকে যাকে মনোনয়ন দিবেন দলের নেতা-কর্মীরা তারই নির্বাচন করবেন। মনোনয়ন নিয়ে দলের নেতা-কর্মীরাদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। দলের নেতা-কর্মীরাদের মধ্যে নৌকা প্রতিক-ই আসল পরিচয়।
সরেজমিনে কথা হয় স্থানীয় আ’লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে তারা জানান, নৌকা প্রতিকের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন ভোটের মাঠে লড়তে পারে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। বলা চলে নৌকার সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে রামগতিতে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ মুরাদ, যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ্ উদ্দিন হেলাল এবং কমলনগরে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পী, যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহ হিরণ সহ অনেকে কাজ করছেন। এছাড়াও রামগতি-কমলনগর উপজেলায় একাধিক জনপ্রতিনিরা কাজ করছেন। মহাজোটের প্রার্থী নৌকা প্রতিক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাথে মুল লড়াইয়ে নৌকা প্রতিকে বিজয়ী হওয়া কষ্টসাধ্য হবে এমন আশা ব্যক্ত করেন স্থানীয়রা।
এরআগে, গত ২৭ নভেম্বর দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে নৌকার মাঝি হিসেবে আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি মনোনীত হন। এরপর মাঝ পথে নৌকার প্রার্থী পরিবর্তন নিয়ে নানা রকম আলোচনা ও গুঞ্জন শুরু হয়। শেষমেশ আওয়ামী লীগের জোট সমর্থিত ‘জাসদ ইনু থেকে মো.মোশারফ হোসেনকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোশারফ হোসেন ৬০এর দশকে অবিভক্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হিসাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক। তিনি মুক্তিযুদ্ধে রামগতি-হাতিয়া-ভোলাসহ দ্বীপাঞ্চলে মুজিব বাহিনীর অন্যতম কমান্ডার ছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৯৮৮ সালে এ আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন জানান, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দল থেকে যাকে-ই নৌকা প্রতিক দেওয়া হবে তাকে জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। দল মহাজোটের প্রার্থীকে নৌকা প্রতিকে মনোনীত করেছেন। তাকে বিজয়ী করতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে কাজ করছি।
এদিকে রামগতি উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ মুরাদ বলেন, আসনটিতে যোগ্য প্রার্থীকে দল মনোনীত করতে পারেনি। যার কারণে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বতন্ত্র হিসবে বেছে নিয়েছি। তিনি কার পক্ষে কাজ করছেন। রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ্ উদ্দিন হেলাল বলেন, দল অংশগ্রহনমুলক নির্বাচনে নিমিত্তে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে সুযোগ দিয়েছে। যার কারণে জনগনের মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে কাজ করছি।
এ ব্যাপারে জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল- জাসদ (ইনু) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে মহাজোটের প্রার্থী মোশারফ হোসেন বলেন,তিনি ১৯৮৮ সালের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। তখন জনগণের জন্য কাজ করেছেন। নিজের স্বার্থে কিছুই করেননি। কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিইনি। এখন জোট তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি জয়ী হয়ে রামগতি-কমলনগরের মেঘনার ভাঙন রোধসহ সকল উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর -৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে জোটের প্রার্থী ছিলেন বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান। তিনি গত নির্বাচনে নৌকা নিয়ে জয়ী হন। বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণ খেলাপির অভিযোগে এবার মান্নানের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। আপিলেও তার প্রার্থীতা বাতিল হয়।