শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » বিবিধ » কমলনগরে ল্যাব বন্ধের দুই নির্দেশনায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
কমলনগরে ল্যাব বন্ধের দুই নির্দেশনায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বেসরকারি ল্যাব এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর তদন্তের নামে হাতে লেখা লোকাল প্যাডে সীল বিহীন স্বাক্ষর করে ল্যাব বন্ধের নির্দেশ প্রধান করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু তাহের। অফিস চিঠি বিহীন নির্দেশনা অফিস রুল বহি:ভূত, বেআইনি। কোন বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে সেটা হতে হবে অফিস প্যাডকৃত চিঠি বলেন, জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আহমেদ কবির।
জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা আহমেদ কবির বলেন, হাতে লেখা লোকাল প্যাডে বেসরকারি ল্যাব হাই-কেয়ার ল্যাব এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশনাটি হাতে পেয়েছি। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ, বেআইনি। কোন কর্মকর্তা কাউকে নোটিশ করতে হলে তাকে অফিস প্যাডে নোটিশ করতে হবে। তিনি যেটা করেছেন, সেটা অফিস রুলে পড়ে না। সরকারি নিয়ম নীতি না মেনে কোন বেসরকারি ল্যাব পরিচালিত হবে না। তবে কিছু নির্দেশনা দিতে হয় নিবন্ধন সহ কাগজপত্র নবায়ন করতে।
তিনি আরও বলেন, ল্যাব পরিচালনা করতে পরিবেশ ছাড়পত্র, ল্যাবের রুমের সঠিক পরিমাপ, রোগ নির্নয়ক যন্ত্রপাতি, এমবিবিএস ডাক্তার সহ যাবতীয় আব্যশিক কাগজপত্র থাকতে হবে।
হাই-কেয়ার ল্যাব এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর মালিক মো.জামাল বলেন, গত বুধবার(২২ ফেব্রুয়ারী) সকালে জেলা সিভিল সার্জন অফিসে সকল ল্যাব মালিকদের নির্দেশনামুলক সভা ছিল। হঠাৎ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাই-কেয়ার ল্যাবে প্রবেশ করেন এবং ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে হাতে লেখা লোকাল প্যাডে ল্যাব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন। আবার পরেরদিন বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) অফিস প্যাডে চিঠি ইস্যু করেন। ল্যাব বন্ধের কারণগুলো সম্পূর্ণ করতে সময় দিয়ে দেয়। তবে অফিস চিঠিতে বন্ধের কোন নির্দেশনা নেই।
স্থানীয় কিছু ল্যাব মালিকদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, উপজেলার প্রায় ল্যাবের নিবন্ধন নবায়ন ও কাগজপত্র থাকার পরও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার হেনস্তার শিকার হতে হয়। অথচ কিছু ল্যাবের নিবন্ধন নবায়ন সহ যাবতীয় সমস্যা থাকার পরও কিভাবে তারা ল্যাব পরিচালনা করেন। বিষয়গুলো নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কোন তদারকি করে না। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএস) ডা. আবু তাহের এর খামখেয়ালিপনায় বিব্রত হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা বিভিন্ন বাজারে প্রায় ২২ টি বেসরকারি ল্যাব ও ২ টি হাসপাতাল গড়ে উঠে। এখানে সরকারি হাসপাতালের বাহিরে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বেসরকারি ল্যাব ও হাসপাতাল গুলো গড়ে তোলা হয়। কিন্তু হি…তে বিপরীত কান্ড দেখা যাচ্ছে। অর্থের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ও অপচিকিৎসায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নজরে থেকেই এগুলো করছে এবং সেটাই হচ্ছে। এছাড়াও টিন সেটে চলছে এক্স-রে মেশিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। যা সম্পূর্ন অবৈধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, সরকারি নিয়ম-নীতির কথা মুখে শুনা যায়। নিবন্ধন ও নিয়ম না থাকলে ল্যাব বন্ধ ঘোষনা করা হবে। তবে আদৌ এমন কোন ল্যাব বন্ধ হয়নি। তদন্তে এসে খানিক বন্ধের নোটিশ দেয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার খুলে দেয়। চোর পুলিশ, চোর পুলিশ খেলা দেখা যায়।
কিছু ভুক্তভোগী জানান, ডা.আবু তাহের (টিএস) হিসেবে যোগদানের পর থেকে উপজেলায় অব্যস্থাপনায় সরকারি নিয়ম বহি:ভুত বেসরকারি ল্যাব বেড়ে গেছে। তার নির্দেশেই চলছে এমবিবিএস ডাক্তার, রোগ নির্নয়ক যন্ত্রপাতি বিহীন ল্যাবগুলো। ডাক্তার নেই, ডিএমএফ চিকিৎসক দিয়ে হচ্ছে চিকিৎসা। ডিএমএফ চিকিৎসক দিয়ে বড় বড় রোগ নির্নয়ক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে সাধারণ রোগীদের সাথে তামাশা করা হচ্ছে। বিষয়গুলো চোখের সামনে হলেও চোখ যেন পড়ছে না এমনটাই তারা দাবি করেন।
তারা আরও দাবি করেন, এমবিবিএস ডাক্তার ছাড়া ডিএমএফ চিকিৎসকরা কি পরিমান প্রেসক্রিপশন করছে সেটা তদন্ত করলেই বের হয়ে যায়। এগুলো তো চোখের সামনে। শুধু ল্যাবগুলোর পরিদিনের ডাক্তারি পরিক্ষা-নিরীক্ষা ও প্যাড দেখলে বুঝা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আবু তাহের বলেন, হাতে লেখা প্যাডে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরে অফিস চিঠি ইস্যূ করে সময় দেয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম-নীতির মধ্য থেকে ল্যাবগুলো পরিচালিত হবে। যেগুলো নিয়মের মধ্যে নেই, সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হবে।