রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » অপরাধ ও দুর্নীতি » টাকা ছাড়া সেবা নেই, অভিযোগ ভূমি তহশিলদার জসিমের বিরুদ্ধে
টাকা ছাড়া সেবা নেই, অভিযোগ ভূমি তহশিলদার জসিমের বিরুদ্ধে
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে চর কাদিরা ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত তহশিলদার) মো.জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে ভূমি সংকান্ত নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ বানিজ্য ও নামজারি হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিনিয়ত তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমছে। তিনি চর কাদিরা মৌজায় তোরাবগন্জ ও চর কাদিরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দায়িত্ব পালন করছে।
চর কাদিরা মৌজায় দীর্ঘদিন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা না থাকায় উপসহকারি ভূমি কর্মকর্তা জসিমের আদিপত্য বিস্তার চলছে রমরমা। তহশিলদার দালালের সংঘবদ্ধতা তৈরি করে চরের সহজ-সরল ভূমি মালিকদের মোটা অংকে টাকার বিনিময়ে নামজারি, খাজনা রসিদ তৈরি করে দেন। তিনি রীতিমত খাজনা রসিদ বানিজ্য ও নামজারির দর কষাকষিতে ব্যস্থ সময় পার করছেন। টাকা ছাড়া ভূমি সংকান্ত কোন সেবাই চর কাদিরা ভূমি অফিসের হচ্ছে জানান ভুক্তভোগী কিছু পরিবার।
জানা যায়, তার বিরুদ্ধে হয়রানি কৃত সাধারণ মানুষ উপজেলা ভূমি সহকারি কমিশন বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন এবং অভিযোগের প্রকাশ্য আন্দোলন করেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে গনমাধ্যমে দুর্নীতি ও ভূমি মালিকদের হয়রানিমুলক সংবাদ প্রকাশ হয়।
জমির খাজনা ও হোল্ডিং খুলতে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। টাকা দিলেও হতে হচ্ছে নানামুখি হয়রানি। একজনের নামের জমি কয়েকজনকে নামজারি করে দেয়। আবার টাকা দিলে বাতিলও করেন তিনি। তার কারণে ভূমি অফিসের সাধারণ মানুষ আসে না। সরাসরি ভূমি অফিসের গেলে কাজ হয় না। কিছু লোক বসে থাকে তাদের দিয়ে চুপিসারে কাজ করতে হয়। সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করছে ভূমি তহশিলদার জসিম উদ্দীন। এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
মো.কামাল অভিযোগে বলেন, তার নামীয় ১৮শতাংশ ভূমি দায়িত্বে থাকা তহশিলদার মো.জসিম ০৩ বার বিভিন্ন জনকে নামজারি করেন দেন। পরে দুই বার তদন্ত করেন নামজারি গুলো বাতিল করেন এবং নামজারি করে দিবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। ৩০ হাজার টাকা দিলে বাকি ২০ হাজার টাকার জন্য নামজারি বাতিলের আবেদন করেন তিনি।
মো.দুলাল নামজারি করবে ১একর ৩০শতাংশ জমি। নামজারি করতে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে তাকে ১০ হাজার টাকা দেই। গত দেড় বছরে নামজারি করে দেয়নি। এখন নামজারি নিতে আসলে আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু এখন জানতে পারি টাকা খেয়ে তহসিলদার (জসিম) তার জমি অন্যের নামে নামজারি করে দিছে।
আরেক অভিযোগ কারী বলেন, তার বাবার খরিদকৃত সম্পত্তির মধ্যে দুটি দোকান ঘর তোলা ছিল। দীর্ঘদিন পর ঘর সহ জমি দখল করেন স্থানীয় জৈনক ব্যাক্তি। পরে কোর্ট থেকে তদন্ত দিলে তহশিলদার (জসিম) কোর্টে মিথ্যা, বানোয়াট রিপোর্ট জমা দিয়ে তার ক্ষতি করেন। তিনি এই ভূয়া, বানোয়াট রিপোর্টের সত্যতা নিশ্চিত করণের বিচার দাবি করেন।
এভাবে হয়রানিকৃত শত মানুষ উপসহকারি ভূমি তহশিলদার মো.জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষ বানিজ্যে অভিযোগ করেন। তবে কিছু ভুক্তভোগী বললেও অন্যরা ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না। কারণ তাহলে তাদের নামজারি অথবা খাজনা রসিদ জমা দিতে হয়রানি করবে তিনি।
চর কাদিরা ও তোরাবগন্জ ইউনিয়নে সরকারি নথিভুক্ত খাস খতিয়ানের প্রচুর জমি রয়েছে। তহশিলদার জসিমের ইন্দ্রনে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যে নামে-বেনামে অর্থের বিনিময়ে নথিভুক্ত করে দিচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে।
উপসহকারি দায়িত্বে থাকা তহশিলদার মো.জসিম উদ্দীন, তার বিরুদ্ধে নামজারি ও খাজনা রসিদ বানিজ্য তথ্য মিথ্যা, বানোয়াট এবং তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে কিছু নামদারি চক্র এমন অভিযোগ করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে সহকারি কমিশন (ভূমি) অফিসে দেয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ভী-বাণী/ডেস্ক