বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসায় খুশি আলাউদ্দিন ভাই
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : চালান নেই, সম্পূর্ণ বিনা পুঁজিতে করছে সৎভাবে হালাল ব্যবসা। প্রতিদিন আয় হচ্ছে ৫-৬ শত টাকা। সকাল ৬ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত, মাত্র ৪ ঘন্টায় আয় হচ্ছে মাসে ১৮-২২ হাজার টাকা। সম্পূর্ন স্বাধীন ব্যবসা। এমন স্বাধীন ব্যবসা করছে আলাউদ্দিন ভাই..।
এভাবে প্রতিদিন গ্রাম-গন্জে চোখে পড়ছে বাই সাইকেল যোগে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রির হকার। তারা দিচ্ছে সাধারণ মানুষকে কম মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির সামদ্রিক মাছ।
কথা হয় আলাউদ্দিন ভাই’র সাথে…তিনি জানান, গত আট বছর যাবত স্বাধীন ব্যবসা করছি। পুঁজি ছাড়াই মাসে আয় হচ্ছে ১৮-২২ হাজার টাকা। প্রতিদিন সকালবেলা আড়ত থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি করছি। মাছ আনতে কোন পুঁজি লাগে না। শুধু সাইকেলটা নিজের টাকার কিনা। ১৫ শত টাকা দিয়ে পুরানো বাইসাইকেল কেনা হয়েছে। প্রতিদিন সকালে আড়ত থেকে ছোট ইছা মাস, ইলিশ, পাঙাস, রুই, কাতল, কার্পো, তেলাপিয়াসহ নদী ও পুকুরের বেশ রকমের মাছ ফেরি করি। প্রতিদিন আয় হচ্ছে ৫-৭ শত টাকা। লোকসান তেমন একটা হয় না। সকালে আড়ত থেকে মাছ নিয়ে বিক্রি করে বিকেলে আড়তদারকে হিসেব করে টাকা দিয়ে দেই।
আগে কি করতেন জানতে চাইলে বলেন, ছোট বেলা থেকে চা দোকানে কাজ করতাম। সারাদিন চা দোকানে কাজ করে বেতন যা পেতাম তার চেয়ে কষ্ট বেশি পেতাম। সকাল ৫টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কাজ করে ৩ শত টাকা হাজিরা পেতাম। স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। পরে চিন্তা করলাম স্বাধীন কিছু করতে হবে। কিন্তু কি করমু, ভাবতে থাকি…কোন ব্যবসা করতে হলে তো প্রচুর টাকা লাগবে। টাকা কই পামু, পরে চিন্তা করলাম, মাছের ব্যবসা করমু। প্রতিদিন আড়ত থেকে মাছ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বিক্রি করলে তেমন পুঁজি লাগবে না। এমন চিন্তা থেকে ব্যবসা শুরু করি। এখন গত আট বছর খুব ভালো আছি। এছাড়াও গ্রামের মানুষ কম দামে ভালো মাছ কিনতে পারছে। তবে গ্রামে মাছ বিক্রি করা একটা সেবাও বটে..তিনি মনে করেন..। অনেক নিরীহ মানুষ টাকার জন্য মাছ খেতে পারে না। আমাদের জন্য তারা তো মাছ খেতে পারছে…!
সংসারে কে কে আছে জানতে চাইলে বলেন, দুই ছেলে, বউ আর তিনি..। বড় ছেলে জুনাইদ আল হাবিব স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট ছেলে জোবায়ের আল মাহমুদ। আলাউদ্দিন ভাই’র বাবার নাম মৃত আয়ুব আলী। তাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স ইউনিয়ন এলাকায়। মাছের ব্যবসা করে তিনি খুব সুখেই জীবন সংসার করছেন। তিনি খুবই সুখি ও আনন্দ নিয়ে সন্তানদের লেখা পড়া করাচ্ছেন। প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেল নিয়ে আড়ত থেকে মাছ নিয়ে ৩-৪ ঘন্টার কাজ করেন। এবং সারাদিন পরিবার ও অন্যান্য কাজ করেন। তিনি সময় এবং আয়ে খুব খুশি…।
আলাউদ্দিন ভাই আরও বলেন, কোন মানুষ মন থেকে চাইলে পুঁজি ছাড়াই সৎভাবে অনেক ছোট-খাটো ব্যবসা করে সুন্দর জীবন চালাতে পারেন। শুধু সৎ সাহস ও মনোবল থাকতে হবে।
গ্রাহক বাহার, আনোয়ার জানান, হকারদের কাছ থেকে কম টাকায় ভালো মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে গেলে বেশি দামে মাছ কিনতে হয়। অনেক সাধারণ মানুষ টাকা থাকলেও বাজারে গিয়ে মাছ কিনতে পারছে না। গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যারা মাছ বিক্রি করছে তারা সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ খেতে সহযোগিতা করছেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ হকারদের কাছ থেকে মাছ কিনে উপকৃত হচ্ছেন।
ভী-বাণী /আমু