চোখ উঠা আতংক নয়, সম্পূর্ণ ভয়মুক্ত রোগ- ডা.আবু তাহের
বিশেষ প্রতিবেদন-আমজাদ হোসেন আমু,
ডা.আবু তাহের ‘চোখ উঠা ‘নিয়ে তিনি বলেন, “চোখ উঠা ” এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটি রোগ। চোখ উঠা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। স্বাভাবিক নিয়মের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই রক্ষা পাওয়া খুবই সহজ..।
চিকিৎসকের ভাষায় “চোখ উঠা” একটি ভাইরাস জনিত ইনফেকশন। “চোখ উঠা” বলতে চোখ লালচে বর্ণ ধারণ করা। এটি একটি উপসর্গ। বিভিন্ন জীবানু দ্বারা চোখ লালচে হতে পারে যেমন -এডিনো ভাইরাস, হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস, স্কেলেরার ইনফেকশন, ইউভিয়াল টিস্যু ইনফেকশন ইত্যাদি কারণে চোখে নানা ধরণের ভাইরাস সংক্রমণের চোখ লালচে বর্ণ ধারণ করে থাকে। প্রথমে চোখ লালচে হয়। পরে হাত দিয়ে চুলকাতে চুলকাতে চোখ লাল হয়ে যায়। এতে চোখে প্রচুর ব্যথা অনুভব হয়। চোখ থেকে পানি ও আটা জাতীয় তরল বের হয়। রাতে তরল পর্দাথের কারণে চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যায়। এতে সকালে বা রাতে চোখ খুলতে প্রচুর ব্যথা হয়।তবে এটা আতংক নয়, সম্পূর্ণ ভয়মুক্ত রোগ।
চোখ উঠায় করণিয়-
চোখ উঠা রোগের কোন মেডিসিন দরকার পড়ে না। চোখে গ্লাস ব্যবহার করা, চোখে বার বার হাত না দেয়া, চোখে বেশি করে পরিস্কার পানি দেয়া, ধুলাবালি, আগুন-আলো-রোদ্রে না যাওয়া, পুকুর বা নদীর পানিতে গোসল না করা। চোখ উঠা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।১০-১২ দিনের মধ্যে মেডিসিন ছাড়ায় চোখ ভালো হয়ে যাবে। একান্ত বেশি সমস্যা হলে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সারা দেশে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের মধ্যে চোখ উঠা রোগ দেখা যাচ্ছে। তবে চোখ উঠা কোন ছোঁয়াছে রোগ নয়। এটা সম্পূর্ণ মৌসুমি ভাইরাস জনিত সমস্যা। চোখ উঠলে বাসা-বাড়িতে থাকায় উত্তম। চোখের পানি বা ময়লা পরিস্কার করতে টিস্যু অথবা তোয়ালে ব্যবহার করা যায়। হাসপাতালে প্রতিনিয়ত চোখ উঠা সমস্যা নিয়ে রোগিদের ভীড় জমছে। তাদের আমরা অল্প কিছু পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেই। উপরোক্ত পরামর্শ গুলো মেনে চললেই চোখ উঠা সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে। আশা করছি।
সাক্ষাৎকার-
ডা.আবু তাহের- স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা,কমলনগর,লক্ষ্মীপুর
প্রতিবেদনে দেখা যায়-
সারা দেশের সাথে লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর সহ প্রায় উপজেলায় সরেজমিনে দেখা যায় প্রতিটি বাড়ি বা বাসায় চোখ উঠা রীতিমত আতংকে পরিনত হয়েছে। রাস্তায় হাটঁলে দেখা যায় কালো চশমায় প্রায় মানুষের চোখ ডাকা। কোন ঘর বা বাসায় কারো চোখ উঠা শুরু হলে পরিবারে প্রতিটি সদস্যের চোখ উঠা শুরু হয়েছে। শতকরা ৮০ শতাংশ মানুষ চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে। চোখ উঠা যেকোন বয়সে হতে পারে।
সাজ্জাদ, আরিফ, সুমন সহ অনেকের সাথে আলাপ হলে জানা যায়, রাতে ঘুমানোর পরে হঠাৎ সকালে দেখা যায় চোখ লাল হয়ে গেছে। প্রথমে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব না পেলেও পরে দেখা যায়, চোখে প্রচুর ব্যথা ও লাল। পরে বুঝতে পারলাম চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। চোখের ব্যথায় দীর্ঘ সাত দিন যন্ত্রনায় ছিলাম। পরে চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে চিকিৎসা নিয়েছি। তারদের সাথে পরিবারে সবার ‘চোখ উঠা” রোগ হয়েছে। পরিবারের কেউ বাদ যায়নি। অনেক আতংকে ছিলাম। এখন সবাই ভালো আছে।
প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় চোখ উঠা রোগির দেখা মিলেছে। মনে হয় প্রতিটি মানুষ চোখ উঠা রোখে আক্রান্ত হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে “চোখ উঠা” রোগে আতংক বিরাজ করছে। অনেকে ‘চোখ উঠা’ কে ছোঁয়াছে রোগ হিসেবে ধরে নিয়েছে। যার চোখ উঠেছে তার সাথে সবাই আলাদা দুরুত্ব বজায় রাখছে। তবে চিকিৎসকের ভাষায় চোখ উঠা কোন ছোঁয়াছে রোগ নয়। এটি সম্পূর্ণ মৌসুমী রোগ।
ভী-বাণী /ডেস্ক