শুক্রবার, ৮ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » সারাদেশ » কমলনগরে বিতর্কিত চেয়ারম্যান ফের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী..!
কমলনগরে বিতর্কিত চেয়ারম্যান ফের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী..!
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : বিতর্কিত পথ ধরে আবারও নৌকা প্রতিক চেয়ে আলোচনায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চর মার্টিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. ইউছুফ আলী (মিয়া ভাই)। তিনি সালিশ বৈঠকে ধর্ষিত কিশোরীকে নির্যাতন, নিজ বাড়িতে বাল্যবিয়ে আয়োজন, নারী সদস্যকে মারধর, সাবেক ইউপি সদস্যকে হত্যার হুমকি, মসজিদ-মাদ্রাসার জমি দখলসহ নানান বিতর্ক জন্ম দিয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পদে রয়েছেন। সেই বিতর্কিত চর মার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউছুফ আলী (মিয়া ভাই) আবারও চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন। এবং চাইছেন নৌকা প্রতিক।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন, ধরনা দিচ্ছেন বড় ধরণের রাজনৈতিক টেবিল থেকে টেবিলে। এদিকে, টাকার বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন তালিকায় তার নাম এক নম্বর ক্রমিকে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। তিনি টাকা দিয়ে দলীয় প্যাঠে প্রথম নামের অধিকারী হন।
ইউছুফ আলী (মিয়া ভাই) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান। তৃণমূলে না চাইলেও তিনি ফের নৌকার টিকিট নিতে মরিয়া উঠেছেন। এদিকে, বির্তকিত কর্মকান্ড জড়ানো, ইউপি সদস্যের উপর হামলাসহ নানান অনিয়ম অভিযোগে অনাস্থা দিয়েছেন পরিষদের প্রায় সদস্যরা। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এলাকার জনগণ। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলে নৌকার ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বলে স্থানীয় আ’লীগ দাবি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, চেয়ারম্যান শালিশী বৈঠকে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীকে নির্যাতন। নিজ বাড়িতে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীর বাল্যবিয়ের আয়োজন। স্থানীয় চর শামছুদ্দীন জাহেরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদের জমি দখলের চেষ্টা। সাবেক ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান হৃদয়কে হত্যার হুমকি। সংরক্ষিত নারী সদস্য শুকুরি বেগমকে মারধর। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পৃথক মামলা ও মানববন্ধন করা হয়েছে। এছাড়াও অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে অনাস্থা দিয়েছে পরিষদের প্রায় সদস্যরা।
চৌকিদার নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্নসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এতসব বিতর্কিত কর্মকান্ডের পরেও ‘মিয়া ভাই’ নৌকার টিকেট পেলে দলের প্রতি আস্থা হারাবে ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
দলের নেতারা অভিযোগ করেন, তৃণমূলের কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে কেন্দ্রে তালিকা পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকা টাকার বিনিময়ে করা হয়েছে। তালিকায় ৫ জনের নাম পাঠানো হয়েছে, তাতে প্রথমেই রাখা হয়েছে বিতর্কিত চেয়ারম্যানের নাম।
জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্র নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি জিয়া উদ্দিন ফারুক বলেন, জেলা ও উপজেলার দায়িত্বশীল নেতারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নাম তালিকার শীর্ষে রেখেছেন। এমন বিতর্কিত নেতাদের দলীয় নমিনেশন দিলে আস্থা হারাবে দলীয় নেতা-কর্মীরা।
নৌকার টিকেট প্রত্যাশী আলমগীর সারোয়ার ও ইউনিয়ন যুব লীগের সাবেক সভাপতি আনিছুর রহমান হৃদয় বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন। তবুও তার নাম তালিকার এক নম্বরে। অথচ ত্যাগীরা বঞ্চিত হচ্ছে। যাচাই বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীকে নৌকা দেওয়া দাবী জানান তারা।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার বলেন, জেলার নেতাদের নির্দেশনায় দলীয় তালিকায় ১ নম্বরে ইউছুফ আলীর নাম দেওয়া হয়েছে। এখানে এককভাবে আমার কিছু করার ছিল না।
প্রসঙ্গত, আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নসহ তিন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ ঢাকা থেকে দলীয় টিকেট দেওয়া শুরু করেছে।