বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » » ঘূর্ণিঝড় ‘শাহিন’ ওমানে লক্ষ্মীপুরে একই পরিবারের ৩ জন নিহত
ঘূর্ণিঝড় ‘শাহিন’ ওমানে লক্ষ্মীপুরে একই পরিবারের ৩ জন নিহত
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ‘শাহিন’ এর প্রবল আঘাতে লন্ডভন্ড ওমান। ওমানের ইতিহাসে বিগত ১২০ বছরে এই প্রথম এভাবে আঘাত করে কোন ঘূণিঝড়। ওমানে ঘূর্ণিঝড় শাহিনের আঘাতে বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলায় একই পরিবারের ০৩ জন নিহত হয়েছে। তারা জেলার সদর উপজেলার পাবর্তীনগর ইউপি’র মধ্যম মকর ধ্বজ গ্রামে বাসিন্দা।
মৃতদের মধ্যে রয়েছে মিঝি বাড়ির মৃত নুরুল আমিনের ছেলে শামছুল ইসলাম (৫৫), চাঁন কাজী বাড়ির শুকুর উল্ল্যাহ ছেলে জিল্লাল হোসেন (৪৫), আব্দুল করিম চেরাঙ্গের বাড়ির আব্দুস শহিদের ছেলে আমজাদ হোসেন হ্নদয়(২৮)।
জানা যায়, শামছুল ইসলাম ও আমজাদ হোসেন হ্নদয় আপন মামা-ভাগিনা। এবং শামছুল ইসলাম ও জিল্লাল হোসেন আপন চাচাতো। তারা উভয় আত্মীয়স্বজন।
পারিবারিভাবে জানা যায়, নিহতরা ওমানের সাহামে উম্মে ওয়াদি লেবান পারপার নামক স্হানে বসবাস করতেন। এবং খেজুর বাগানের কাজ করতেন। কাজ করা অবস্থায় ঘূণিঝড় শুরু হলে এদের বাতাস ও পানির স্রোতে ভেসে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়ভাবে খোঁজাখুঁজির পর এদের বিক্ষিত মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।
মৃত শামছুল ইসলাম দীর্ঘ ত্রিশ বছর ওমান প্রবাসী। তার তিন মেয়ে, এক ছেলে, স্ত্রী রয়েছে। মৃত জিল্লাল হোসেন দীর্ঘ ১৫ বছর ওমানে রয়েছে। তার তিন ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। অন্যদিকে মৃত আমজাদ হোসেন হ্নদয়ের তিন বোন, এক ভাই ও বাবা মা রয়েছে। আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্যে এরা অসহায়। মৃত ব্যাক্তিরা ছিলেন পরিবারে অর্থ উপার্জনের একমাত্র ভরসা। এদের মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকাতে শোকে ছায়া নেমে এসেছে।
মৃত ব্যাক্তিদের মরদেহ দেশে আনতে এখনো কোন ব্যবস্থা করা হয় নি। তবে ওমানে কথা হচ্ছে। সেখানে আইনিভাবে সমাধান করার চেষ্টা হচ্ছে বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়।
পার্বতীনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সালা উদ্দীন ভূইয়া বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। মকরধ্বজ গ্রামের মেম্বারকে ফোন দিয়ে খবর নিচ্চি। খবর নিয়ে তাদের পরিবারের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলার দায়িত্বরত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহ -কমিশনার (ভূমি) মো. মামুন হোসেন বলেন, এধরনের কোন তথ্য জানা নেই। তবে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে মৃতদের জন্য আর্থিক অনুধানের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার(০৩ অক্টোবর) ওমানে ঘূণিঝড় শাহিনের ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে তীব্র বৃষ্টিতে রাস্তা প্লাবিত হয়ে পড়ে। উপকূলীয় এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় মানুষদের। ঘূর্ণিঝড়ের চোখ যখন স্থলভাগ অতিক্রম করে তখন এর বাতাসের গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রায় দশ মিটার উঁচু ঢেউ তৈরি হয়। এঘূণিঝড়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা জানা যায়নি। তবে বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার তিনজনের মরদেহ ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।