বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » বিবিধ | সারাদেশ » অবিরাম কাজ করছে ভূমি অফিস সহকারি মাহমুদা
অবিরাম কাজ করছে ভূমি অফিস সহকারি মাহমুদা
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : সরকার দেশের প্রতিটি দাপ্তরিক কাজ জনগন যেন শহর থেকে গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘরে বসে ডিজিটাল সিস্টেম (অনলাইন) চালু করেন। অফিস কার্যক্রম অনলাইন ছাড়া চলে না।
ভূমি বা জমি হচ্ছে মানুষের মূল্যবান সম্পদ। এ সম্পদের মূল্য নির্নয় হয় দাপ্তরিক কাগজপত্রে। দাপ্তরিক কাগজপত্র বা রের্কড না থাকলে জমির মালিকানা নিয়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। জমি-জামার কাগজপত্র সঠিক রাখতে ভূমি অফিস একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। ভূমির দাপ্তরিক রক্ষনা-বেক্ষণে নিয়োজিত থাকেন ভূমি কর্মকর্তা ও সহকারি কর্মচারিগন। তাদের মধ্য অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ।
মাহমুদা আক্তার লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা ভূমি অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে দায়িত্বরত। তিনি উপজেলা ভূমি অফিসের নারী কর্মচারী। তিনি উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষের ভূমি সংকান্ত অনলাইনে ডাটাবেজ নিয়ে কাজ করেন।কারণ অনলাইন ছাড়া ভূমি সংকান্ত কোন কাজ হয় না। তিনি গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার ভূমি নিয়ে অফিসে তাদের সহযোগিতায় কাজ করেন। ভূমি অফিসের হয়রানি ও বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগিরা ভরসা মনে করেন তাকে।
মাহমুদা আক্তার বলেন, এখন ভূমি সংকান্ত সকল কাজ হাতে নয় কম্পিউটারে অনলাইনে করতে হয়। ভূমি সংকান্ত নামজারির আবেদন গ্রহন, আপত্তি আবেদন গ্রহন, ডাক ফাইল রক্ষণাবেক্ষণ, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের মাঝে উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি কর্তৃক অমুমোদিত আশ্রয়ন প্রকল্পে প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর বরাদ্দের নথি সৃজন, ভিপি ও একসনা নথিতে সরকারি রাজস্ব আদায়, ভূমি সেবা গ্রহীতাদের নামজারি , রাজস্ব আদায়, ভূমি কর পরিশোধ, ও বিভিন্ন আবেদন এসব কাজ করতে হয়।
এছাড়াও ভূমি সংকান্ত কাজ নিয়ে অনেক সমস্যা, হয়রানি ও জটিলতা সৃষ্টি হয়। অনলাইনে কাজ করতে বেশি হয়রানি হয়। সাধারণ মানুষকে হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে অফিস ও অফিস সময়ের বাহিরে কাজ করি। সাধারণ মানুষ যেন এসব কাজ করতে হয়রানির শিকার না হয়। এবং ভূমি সংকান্ত বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জমি-জামার সব কাজ অনলাইনে করতে হয়। মানুষের চাপ অনেক বেশি। মানুষ মনে করে অফিসে গেলেই কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা কঠিন। কাজ করতে গেলে সকাল থেকে সন্ধ্যা বা রাত হয়ে যায়। মাঝে মাঝে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করি। মাঝে-মধ্যে কাজ করতে গেলে কিছুটা ভুল-ক্রুটি হয়। তারপরও কাজ করে সেবা দিতে চেষ্টা করি। মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়ে সেবা নিতে পারে।
মাহমুদা বলেন, মুজিব বর্ষের অসহায়, বিধবা, আশ্রয়হীনদের সরকার আশ্রয় প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর বরাদ্দ দিচ্ছে। প্রতিটি ঘর সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্যার তদন্ত করে প্রকৃত লোকদের নামে দিচ্ছেন। এছাড়াও ভূমি অফিস কেন্দ্রীক কোন কাজ মানুষকে হয়রানি করে হচ্ছে না। মানুষ নিজের এসে যখন-তখন কাজ করে নিচ্ছে। অফিসের নাজির, সার্ভেয়ারসহ সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেন।
নামজারি করতে আসা মুরাদ, বাহার, মোতালেব, আবুল খায়ের, বাবুল জানান, নামজারির জন্য অনেকের কাছে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছি। কিন্তু অনেকদিন পর্যন্ত কাজ হয়নি। পরে উপজেলা ভূমি অফিসে গেলে মাহমুদা আক্তার নামজারিতে সহযোগিতা করেন । এবং কোন ধরণের হয়রানি ছাড়াই কাজ করে দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত মানুষ ভূমি অফিসে নামজারি বা অন্যান্য কাজ করতে ভিড় জমায়। মানুষ অনলাইনের কাজগুলো কম্পিউটার অপারেটরকে দিয়ে করাচ্ছে। বাহিরে করতে গেলে দালালে খপ্পরে পড়তে হয়। তাই অফিস হচ্ছে একমাত্র ভরসা। এমনটাই জানা যায়…
ভী-বাণী/ডেস্ক