বিয়ের নামে প্রতারনা, প্রতারক বধূ কারাগারে
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি- রাশিয়া প্রবাসী মো. খোকনের সঙ্গে মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নুরজাহান স্মৃতি নামে সুন্দরী এক তরুণীর বিয়ে হয়। দেনমোহরের নিশ্চয়তার জন্য প্রবাসীর বড় ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবের একটি চেক সুরক্ষা হিসেবেও রাখে মেয়ের পরিবার।
এরপরও স্মৃতি তার স্বামীর গ্রামের বাড়িতে থাকতে রাজি নয়। এতে প্রবাসী স্বামীকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে জেলা শহরের আশপাশে জমি কিনতে ১০ লাখ টাকা নেয় নববধূ। এভাবেই বিভিন্ন অজুহাতে খোকনের কাছ থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাশিয়া থেকে গত জুন মাসে খোকন নিজ গ্রাম লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়াতে আসে। ১৯ জুন সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামে মেয়ের বাড়িতে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়েও সম্পন্ন করে। তবে এদিন জোরপূর্বক স্মৃতির পরিবার তার কাছ থেকে ৩শত টাকার রেজিষ্ট্রিকৃত স্ট্যাম্প পেপারে অঙ্গীরনামা নেয়। এতে স্মৃতিকে শারীরিক, মানসিক ও ফোনে কথা বলতে বাধা না দেয়া ও তার পরিবারে কারো সঙ্গে কখনো খারাপ আচারন না করাসহ বিভিন্ন শর্ত উল্লেখ করা হয়। এরআগে ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর ফোনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে ওই তরুণীকে বিয়ে করে খোকন। আনুষ্ঠানিক বিয়ের পরেও স্মৃতিকে খোকন তার বাড়িতে তুলে নিতে চাইলে কালক্ষেপন শুরু করে মেয়ের পরিবার। এরমধ্যেই হঠাৎ করে গত ১৮ জুলাই স্মৃতি লক্ষ্মীপুর আদালতের উপস্থিত হয়ে খোকনকে তালাক দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে যেন আকাশ ভেঙে পড়ে খোকনের মাথায়।
অন্যদিকে কোন উপায় না পেয়ে গত ২১ আগস্ট খোকনের বড় ভাই আবুল খায়ের মানিক বাদী হয়ে কমলনগর থানায় প্রতারক বধূ নুরজাহান স্মৃতিসহ ৭ জনের নামে প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। অন্য আসামিরা হলেন সালেহ আহম্মদ, মো. ইব্রাহিম, জেসমিন আক্তার, মো. রিংকু, আলী হায়দার চৌধুরী প্রিয় ও ঘটক মো. শাহজাহান। এরমধ্যে ঘটন শাহজাহান ছাড়া অন্য ৬ আসামি ২৫ আগস্ট লক্ষ্মীপুর আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক প্রতারক বধূকে কারাগারে পাঠিয়ে অন্য আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। নুরজাহান স্মৃতি জেলা কারাগারে রয়েছে। স্মৃতি সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার মৃত নুরনবীর মেয়ে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভূক্তভোগী প্রবাসী, পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
জানতে চাইলে মো. খোকন জানান, স্মৃতিকে আমার পছন্দ হওয়ায় তাদের সকল শর্তে রাজি হয়েছি। বিভিন্ন অজুহাতে আমার কাছ থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। বিয়ের নামে তারা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
কমলনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, বিয়ের নামে স্মৃতি ও তার পরিবার প্রবাসীর খোকনের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ৬ আসামি আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চেয়েছে। এরমধ্যে ৫ জনকে আদালত জামিন দিলেও স্মৃতিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। স্মৃতি এখন কারাগারে আছে।