স্বপ্নটা অধরাই রয়ে গেলো: শ্রাবণী
একটা সময় চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে শোবিজে পা মাড়িয়েছিলেন তরুণী সানজিদা শ্রাবণী। স্বপ্নের ভেলায় ভেসে যেতে শুরুটা করেছিলেন ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ সুন্দরী প্রতিযোগীতার মধ্য দিয়ে। ২০১২ সালে সেই প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে পৌছেছিলেন সেরা ৫০ জনের মধ্যে। নিজের নামের আগে যোগ হয় লাক্স তারকা। বিজয়ী হিসেবে নাম না আসলেও দমে যান নি মোটেও। ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে নিজের পরিচয় জানান দিচ্ছিলেন এই লাক্স সুন্দরী।
একটু একটু করে স্বপ্ন বুনছিলেন নিজেকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়ার। এরপরই কাজ করার সুযোগ পান গুণী নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরীর বিজ্ঞাপনে। এই নির্মাতার ‘চল বাংলাদেশ’ বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়ে অনেকটা আলোচনায় চলে আসেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি এই সুন্দরীর। জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাতা আদনান আল রাজীবের ‘স্যামসাং জেড ওয়ান’ বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে ফের চমক দেখান। তারপর মিষ্টার নুডলস, আরএফএল-এর গ্যাস স্টফ, লুকাস ব্যাটারী, প্রাণ ম্যাকারনি নুডলস, আরএফএল-এর ট্রান্সফা চেয়ার, এলজির এসি, ওয়ালটনের মোবাইল, স্যামসং মোবাইল, প্রাণ রিকশার বিয়ারিং, অলিম্পিক বিস্কুটের ফাস্ট চয়েজ সহ ১৫টিরও বেশি বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন তিনি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন ৩৫টিরও বেশি বিজ্ঞাপনে।
শ্রাবণী জানান, লাক্স থেকে বের হওয়ার পর নিজেই টুকটাক কাজের জন্য চেষ্টা করতাম। বিভিন্ন মডেল হান্টে ছবি পাঠাতাম, ফটোশুট করতাম। এরপর বিজ্ঞাপনের কাজ শুরু করি। বিজ্ঞাপন দিয়ে পরিচিতি পেলে টানা কাজ করতে থাকি। একটা সময় সেটা ছেড়ে দিয়ে উপস্থাপনায় যোগ দেয়। সেটাও কিছুদিন পর ছেড়ে দেই। এরপর বিয়ের পিঁড়িতে বসে যাই।
কিন্তু এরপরেই কাজ থেকে একটু বিরতি দেন। নিজের গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে কাজ ছেড়ে মনযোগ দেন পড়াশোনায়। ছেড়ে দেন অনেক গুলো বিজ্ঞাপনের কাজ। সেটা শেষ করে ২০১৭ সালের শেষের দিকে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ট্রেনিং নিয়ে চাকুরি শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর সেটাও ছেড়ে দেন তিনি। এরপর আর কাজে নিয়মিত হন নি। শোবিজ থেকে অনেকটা বিদায় নেন।
২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শ্রাবণী। সাড়ে ছয় বছর প্রেম করার পর ভালোবাসার মানুষ এনামুল করিম অমিতের সঙ্গে সংসার জীবনে জড়ান। তার স্বামী যুক্তরাজ্যে চাকুরী করেন। আর সেই কারণে অনেকটা সময় থাকতে হয় বিধায় কাজে নিয়মিত হওয়া অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
শ্রাবণী বলেন, ‘আমার স্বামী যুক্তরাজ্যে থাকায় সেখানে আমার স্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য সেখানে চার মাসের মত অবস্থান করা লাগে। পড়ে চ্যানেলের চাকুরিটা ছেড়ে দেই। সব মিলিয়ে আর ফেরা হয় নি। এতদিন যুক্তরাজ্যেই ছিলাম, দেশে এসেছি চার মাস হলো। আগামী মাসে আবার চলে যাবো পাঁচ মাসের জন্য। আর সেখানেই যেহেতু অবস্থান করবো স্থায়ীভাবে তাই ওখানেই কিছু করার চেষ্টা করবো।আর আবরার হত্যাকান্ডের পর আর দেশে থাকার ইচ্ছেটাও মন থেকে উঠে গেছে। দেশে আসলে এখন শুধু নিজের পরিবারকেই সময় দেই। ওখানে বেশ কিছু বাংলা চ্যানেল আছে, সেগুলো কাজ করার চেষ্টা করবো আগামীতে।’
শোবিজের পথচলায় অল্প সময়েই নিজ অভিনয়গুণে দর্শকের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি কাজ করেছিলেন নাটক ও মিউজিক ভিডিওতেও। ধ্রুব গুহের ‘আদরে রাখি বন্ধু’সহ কিছু মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে হয়েছেন দর্শক নন্দিত। নাচ, মডেলিং, অভিনয় করলেও বড় পর্দায় কাজ করার ইচ্ছে ছিল কিন্তু এখন সেই স্বপ্নটা অধরাই রয়ে গেলো। বেশ কিছু সিনেমার প্রস্তাব পেলেও গল্পে ও মানে পছন্দ না হওয়ায় তা ফিরিয়ে দেন শ্রাবণী।