মহান ভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা - আমু
বিশেষ প্রতিবেদন : ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালে বাংলা মায়ের মুখের ভাষার সম্মান রক্ষার্থে একঝাঁক তরুনের বুকের তাজা রক্তে রন্জিত হয় ঢাকার রাজপথ। পৃথিবীর ইতিহাসে সৃষ্টি হয়েছিল ভাষার জন্য এক অনন্য অভূর্তপূর্ব নজীর। যা ইতিহাসে খুবই বিরল।
ভাষা আন্দোলনে দেশের মানুষ পাঁচজন শহীদের নাম বেশি বেশি শুনতে পান: সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউর। এদের মধ্যে বরকত ও জব্বার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। রফিক ছিলেন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের পুত্র। এরা তিনজন নিহত হন ২১ ফেব্রুয়ারি। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে মারা যান রিকশাচালক সালাম এবং হাইকোর্টের কর্মচারী শফিউর। ছাত্রদের সাথে সাথে ঢাকার রাজপথে খেটে-খাওয়া যুবকও আন্দোলনে প্রান দিয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক অলি আহাদের ভাষ্যে জানা যায়, ২২ ফেব্রুয়ারি ভিক্টোরিয়া পার্কের (বর্তমান বাহাদুর শাহ পার্ক) আশপাশে, নবাবপুর রোড ও বংশাল রোডে গুলিতে কতজন মারা গেছেন, তার সঠিক সংখ্যা কারও জানা নেই। আহমদ রফিক তাঁর একুশ থেকে একাত্তর বইয়ে নিহতদের মধ্যে আবদুল আউয়াল, কিশোর অহিউল্লাহ ও সিরাজুদ্দিনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল।
আজ ৬৯ বছর পা দিয়েছে এ দিনটি। ১৯৯৯ সালে এই দিনটি স্বীকৃতি দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনেসকো। সেদিন থেকে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে বাঙালী জাতি ও সারা বিশ্ব দিবসটি পালন করে।
আজ সবার সব পথ এসে মিলে যাবে এক অভিন্ন গন্তব্য—শহীদ মিনারে। হাতে হাতে বসন্তে ফোটা ফুলের স্তবক, কণ্ঠে নিয়ে চির অম্লান সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী/ আমি কি ভুলিতে পারি…’ ধীর পায়ে এগিয়ে যাবে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ভাষা শহীদদের প্রতি নিবেদিত শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ঢেকে যাবে শহীদ মিনারের বেদি। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
এ দিবসটি উপলক্ষে দেশের আপাময় জনগন শহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করবেন। সবাই সবার মত করে স্ব স্ব স্থানে বা এলাকায় শহীদ মিনারে ফুলেল শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা নিবেদন ও ভালোবাসা জানাবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা বাসী সারা দেশের ন্যায় এ দিবসটি পালন করেন। এদিনে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রতিটি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও প্রশাসনিক দপ্তরে এদিবসটি নিয়ে আলোচনা ও র্যালীর আয়োজন করা হয়। আলোচনার মুল বিষয়, দেশ - ভাষা আন্দোলন- মুক্তিযুদ্ধ।
পরিশেষে, বাঙালি জাতির প্রানের ভাষা মায়ের ভাষা বাংলার জন্য যারা জীবন দিয়েছে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি। তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। এবং লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের সর্ব শ্রেণির জনগনের প্রতি ভালোবাসা জানাচ্ছি।
আমজাদ হোসেন আমু, প্রভাষক ও সংবাদকর্মী