রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » অক্ষয় কুমারের গোমূত্র পানের কারণ জানালেন তসলিমা
অক্ষয় কুমারের গোমূত্র পানের কারণ জানালেন তসলিমা
বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। খুব ফিট যাকে বলে। অক্ষয় কুমার জানিয়েছেন তাঁর ফিট থাকার পেছনের কারণটি, তিনি প্রতিদিন গোমূত্র পান করেন। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র থেকেই প্রেরণা পেয়েছেন, জানিয়েছেন। আয়ুর্বেদ ১০০০ বছর আগের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি। আয়ুর্বেদে গোমূত্রের উপকারিতার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে গরু যখন মাঠে খায়, তখন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নানারকম লতা পাতা খায়। সেগুলো কিছুটা তো প্রশ্রাবে পাওয়া যায়ই।
গর্ভবতী গাভীর প্রশ্রাবেও হরমোন এবং খনিজ দুই-ই পাওয়া যায়। মিনারেল বা খনিজ পদার্থ মানুষের শরীরে থাকা দরকার, সে কারণেই গোমূত্র পান করলেই শরীরে খনিজের অভাব দূর হয়, পুষ্টি যা দরকার, তাও গোমূত্রেই মেলে। আয়ুর্বেদ বলছে, সকালে খালি পেটে গোমূত্র পান করলে বিভিন্ন অসুখ সেরে যায়, এর মধ্যে আছে কুষ্ঠ রোগ, ডায়বেটিস, টিউমার, যক্ষা, পেটের অসুখ বিসুখ, ক্যান্সার।
আয়ুর্বেদ আরও দাবি করছে গোমূত্র যদি কালো নুন, দই এবং ঘির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে জ্বর সারে। রক্তশূন্যতা সারানোর ওষুধ ত্রিফলা, গোমূত্র আর গরুর দুধ। আয়ুর্বেদ আরও বলছে, যে, গোমূত্র শরীরের ভেতরের সব টক্সিন বের করে দেয়। সুতরাং কোনো ক্রনিক অসুখের ঝুঁকি থাকে না। গোমূত্র সাবান আর শ্যাম্পু তৈরিতেও ব্যবহার হয়। এসব আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের দাবি।
কিন্তু বিজ্ঞান কী বলছে? বলছে আয়ুর্বেদের দাবিগুলোর কোনো প্রমাণ মেলেনি। বলছে গোমূত্রে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্রিয়েটিনিন, ফসফরাস, এপিথেলিয়াল সেল পাওয়া যায়, কিন্তু গোমূত্র মানুষের অসুখ বিসুখ সারায় না। খনিজ থাকার ফলে গোমূত্র মাটির জন্য উপকারী হতে পারে, কিন্তু মানুষের জন্য নয়। অক্ষয় কুমার নিশ্চয়ই বিশ্বাস থেকে গোমূত্র পান করেন।
আসলে তাঁর সুস্বাস্থ্যের পেছনে আছে তাঁর ভালো জিন, ভালো এক্সারসাইজ, ভালো ডায়েট। কিন্তু ক্রেডিট যাচ্ছে গোমূত্রে। কিছু লোক উটের প্রশ্রাবও বিশ্বাস করে পান করেন, ওই প্রশ্রাব নাকি তাদের রোগ সারাবে। এ আমরা দেখে অভ্যস্ত যে, ডাক্তার রোগ সারাবার পর সব ক্রেডিট মানুষ দেয় ঈশ্বর, ভগবান, আল্লাহকে। খুব সম্ভবত তাদের অস্তিত্বই নেই। মানুষ সর্বগুণে গুণান্বিত নয়। কারও একদিকে বুদ্ধি খেলে, আরেকদিকে খেলে না। যেদিকে বিশ্বাস আছে, সেদিকে বুদ্ধির ছিটেফোঁটা নেই। তারপরও যুক্তিবুদ্ধিহীন বিশ্বাস জিনিসটা আদিকাল থেকেই আছে। হয়তো আরও বহু শতাব্দি থাকবে।
(তসলিমা নাসরিনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে)