বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | নদ-নদী | সারাদেশ » আবারও জলোচ্ছ্বাসে ভাসছে রামগতি-কমলনগর
আবারও জলোচ্ছ্বাসে ভাসছে রামগতি-কমলনগর
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : মাত্র সাপ্তাহ দু’য়েক আগে মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরের প্রায় ৪০ টি গ্রাম। আবারও একই ভাবে মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে সেই সব গ্রামগুলো। জোয়ারে তেলিয়ে গেছে হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় গ্রামের পুকুর, জলাশয় ডুবে গেছে।এছাড়াও কাঁচা ঘর-বাড়ি, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। পানির তোড়ে বিভিন্ন সড়ক ভেঙে গেছে।পানিবন্দি হয়েছে অন্তত ৫০-৬০ হাজার মানুষ।
গতকাল বুধবার( ১৯আগস্ট) দুপুর থেকে জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ফুট বেড়ে যায়।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেও নামছে না পানির স্রোত। ভেসে যাচ্ছে আগের মত সবকিছু।
হাজার পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা আর আতঙ্ক। একইভাবে গত ৫ আগস্টের কয়েক দফা জোয়ারে রামগতি ও কমলনগরে ব্যাপক ক্ষতি হয়।
গত চার দশক ধরে রামগতি ও কমলনগরে মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যায়। বেড়িবাঁধ না থাকায় এখন অরক্ষিত দু’ উপজেলা। যে কারণে জোয়ার এলেই প্লাবিত হয় এসব অঞ্চল।
দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। ফসলি জমি-মাঠ পেরিয়ে পানি ঢুকে পড়ে বসতঘরে। জোয়ারে পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৬ থেকে ফুট বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জোয়ারে স্রোতে রামগতির সহস্রাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাস্তাঘাট ও পুল-কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এতে অভ্যন্তরীণ কয়েকটি সড়কে যোগাযোগ ব্যাহত হয়, দুভোর্গে পড়ে চলাচলকারীরা। বেড়িবাঁধ না থাকায় মেঘনা নদীর তীরবর্তী বালুরচর, সুজনগ্রাম, জনতা বাজার, মুন্সীরহাট, সেবাগ্রাম, চর আলগী, বড়খেরী, চর গাজী, চর গজারিয়া, চর মুজাম্মেল ও তেলিরচর এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। পানিতে প্লাবিত হয় মুন্সীরহাট বাংলাবাজার, জনতা বাজার ও চেয়ারম্যান বাজার।
এদিকে কমলনগরে চর কালকিনি, চর মার্টিন, চর লরেন্স, সাহেবেরহাট, ফলকন ও পাটারিরহাট ইউনিয়ন পানির নিচে ডুবে গেছে।
নাছিরগঞ্জ, মাতাব্বরহাট, বাঘারহাটসহ উপকূলীয় হাট-বাজারগুলো পানিতে তলিয়ে আছে।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা থেকে রামগতি পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ৩২ কিলোমিটার বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকরা বলেন, জোয়ারের পানিতে জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এছাড়া জলাশয়, পুকুরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
চর ফলকন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজ্বি হারুনুর রশিদ জানান, জোয়ারের পানিতে তার ইউনিয়ন প্রায় ডুবে আছে। রাস্তাঘাটে চলাচল করা যায় যাচ্ছে না। সবচেয়ে বড় বাজার লুধুয়া দু বার ভাঙার পর আবারও ভাঙনের পথে। বেড়ি বাঁধ না থাকায় এমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত সমস্যা নিরসনে বেড়ি বাঁধ দরকার।
কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পী বলেন, জোয়ার এলেই কমলনগর ডুবে যায়। ফের অস্বাভাবিক জোয়ারে উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পানির নিচে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সাপ্তাহ খানেক আগে জলোচ্ছ্বাসে পানিতে ডুবে গেছে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় অংশ। এভাবে চলতে থাকলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি সম্মুখীন হবে এ অঞ্চলের মানুষ। দ্রুত সরকার কে বাধঁ নির্মানের পদক্ষেপ নিতে হবে।
ভি-বানী /ডেস্ক/আমু