চাঁদপুরে মাদ্রাসার ছাত্রী মসজিদের ইমাম দ্বারা ধর্ষিত
চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুর সদরে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে মসজিদের ইমাম ফয়সাল আহমেদ খানের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলা চান্দ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোডে রাশেদিয়া জামে মসজিদের ইমাম। তার বিরুদ্ধে ঐ ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করা অভিযোগ উঠে।
মাদ্রাসাছাত্রী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ধর্ষণের ঘটনাটি জানা জানি হয়। অভিযুক্ত ইমাম ফয়সাল আহমেদ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত ফয়সালের সহযোগী ফরিদগঞ্জ উপজেলার আইলার রাস্তা এলাকার উত্তর হাসা খান বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম ও রাহবার শিল্প গোষ্ঠীর প্রধান ওসমান বিভিন্ন জায়গায় তদবির চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
ভিকটিম ছাত্রীর মা জানান, রাশেদিয়া জামে মসজিদের ইমাম ফয়সালের কাছে প্রতিদিন সকাল ছয়টায় মেয়ে কোরআন শরীফ তেলাওয়াতের জন্য মসজিদে যায়। এ সময় লম্পট ফয়সাল মসজিদের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দেওয়ার পর মসজিদের রুম পরিষ্কার করার জন্য বলে। এ সময় ইমাম ফয়সাল সুযোগ বুঝে তার রুমে ঢুকে দরজা আটকে জোরপূর্বক মেয়েকে ধর্ষণ করে ও মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখে। মেয়েকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ও তার নগ্ন ছবি মানুষকে দেখাবে বলে হুমকি দিয়ে প্রতিদিন তার সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা করতো। মেয়ে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বুঝতে পেরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অবশেষে সে ঘটনাটি জানায়।
ঘটনাটি জানা জানি হলে ফয়সাল মেয়েকে বিয়ে করার আশ্বস্ত করলেও তার সহযোগী উত্তর হাসা জামে মসজিদের ইমাম ওসমান ও তারেক তাকে কু বুদ্ধি দিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে লুকিয়ে রাখে। বর্তমানে ধর্ষণকারী ফয়সাল আহমেদ তার বন্ধু ওসমানের বাড়ি ১১ নম্বর ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের চরে লুকিয়ে আছে বলে স্থানীয়রা জানান।
স্থানীয়রা জানান, ফয়সাল আহমেদ রাশিদিয়া জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। এই মসজিদে ছাত্র-ছাত্রীদের কুরআন শিক্ষা দেওয়ার নামে তাদের সঙ্গে জোরপূর্বক অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। ফয়সালের পূর্বে বরিশালের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তার সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করেছে। সেই ঘটনা তার সহযোগীরা সমাধান করেছেন।
তার সহযোগী ওসমান, তারেক ও মমিন রাহাবার শিল্পগোষ্ঠী নামে একটি সংগঠন জড়িত থেকে এর আড়ালে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন। তারা বিভিন্ন মসজিদের ঈমামতি করার নামে জঙ্গী সংগঠনের কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।
রাশিদিয়া জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মান্নান হাজী জানান, মসজিদে পড়তে আসা এক মাদ্রাসা ছাত্রীর সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানা জানি হওয়ার পর ইমাম ফয়সাল পালিয়েছে। আমরা চাই অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি যাতে সঠিক বিচার পায়, আর এর সঙ্গে জড়িত যারা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
এ বিষয়ে ১২ নম্বর চান্দ্রা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান খানজাহান আলী কালু পাটওয়ারী জানান, এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না।