সম্পর্ক ব্রেক নেয়ার লক্ষণ
অনলাইন ডেস্ক-
এক নাগাড়ে কাজ করতে করতে মাঝে মাঝে ব্রেক নেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে। তেমনই সম্পর্কের ক্ষেত্রেও অনেক সময় ব্রেক নেওয়া দরকার। তবে মনে রাখবেন ব্রেক নেওয়া মানেই কিন্তু ব্রেক আপ নয়। অনেক সময় সম্পর্ক বাঁচাতেই কিছু সময়ের জন্য পরস্পরের কাছ থেকে দূরে সেরে থাকতে হয়। নইলে সম্পর্ক হয়ে যায় ম্যাড়ম্যাড়ে। এতে সম্পর্ক একেবারে ভেঙে যাওয়া অবস্থাতেও চলে যেতে পারে।
অনেক সময় বন্দুত্ব বা প্রেমের সম্পর্কে ছাপ পড়ে ব্যক্তিগত সমস্যা। এছাড়া একসাথে থাকতে থাকেতে একঘেয়েমি থেকেও সম্পর্কে তিক্ততা এসে যায়। এই সব ক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য নিজেদের কাছ থেকে দূরে থাকাটাই ভালো। এই সাময়িক বিচ্ছেদ টনিকের মতো হারিয়ে যাওয়া টানকে আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই সম্পর্কে ব্রেক নেওয়ার কথা শুনে ভেঙে না পড়ে বরং সম্পর্ক বাঁচানোর তাগিদেই কিছু সময়ের জন্য দূরে দূরে সরে থাকাটা বেটার। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে বুঝবেন সম্পর্কে যে বেক নিতে হবে! বেশ কিছু লক্ষণ থেকেই আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন। নিচে এমন কিছু লক্ষণ তুলে ধরা হলো।
১. অল্পেই খিটিমিটি
আপনার সঙ্গী যা বলছেন বা যা করছেন, সব কিছুতেই কি আপনি রেগে যাচ্ছেন? তার কোনও কথাই ধৈর্য্য ধরে শোনার মানসিকতা আর আপনার মধ্যে কাজ করছে না? তাহলে সময় এসে গিয়েছে কিছু সময়ের জন্য পরস্পরের থেকে দূরে থাকার। এই সময় সম্পর্কে কিছুদিনের ব্রেক নিলে আবার হয়তো আপনারা নতুন করে শুরু করতে পারবেন।
২.টান কমে যাওয়া
আপনি কি সঙ্গীর প্রতি আগের সেই প্রবল টানটা অনুভব করছেন না? তার প্রতি আগের মতো আকর্ষণ বোধ করছেন না? তাহলে এবার আপনার ব্রেক নেওয়ার সময় এসে গেছে। কারণ এই ভাবে চলতে থাকলে সম্পর্ক আর বেশিদিন টিকবে না। তার থেকে একটা ব্রেক নিয়েই দেখুন না, সব কিছু নতুন করে শুরু করা যায় কি না।
৩.সারাক্ষণ ঝগড়া
সব প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যেই ঝগড়া হয়। এটা তো খুবই স্বাভাবিক। তবে ঝগড়াটা যদি রুটিন হয়ে দাঁড়ায় সে ক্ষেত্রে কিন্তু ভেবে দেখার আছে। ছোটখাটো সব বিষয়েই যদি ঝগড়া হয় তাহলে এবার আপনাদের কিছুদিনের জন্য আলাদা থাকার সময় এসে গেছে।
৪.মনযোগের অভাব
সুস্থ সুন্দর সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা যেমন আছে, তেমনি আছে ঝগড়া এবং মান-অভিমানও। তাই সঙ্গী কোন কারণে মুখ ভার করলে তার মান ভাঙানো কিন্তু খুবই জরুরি। কিন্তু যখন দেখবেন আপনার সঙ্গী আপনার মন খারাপ বা মান-অভিমানের বিষয়টিকে পাত্তাই দিচ্ছে না, তখন কিন্তু চুপ করে বসে থাকলে হবে না। কেননা তার এমন আচরণের অর্থ হচ্ছে, আপনার ভালো মন্দে তার কিছু যায় আসে না। তাই এই সময়ে ব্রেকআপি নিতে হবে। কেননা সঙ্গীর জীবনের সমস্যার দিকে মনে দিতে না পারলে সেই সম্পর্ক খুব বেশি দিন টিকে না।
৫.সম্পর্কে স্পেস
সব সম্পর্কেই কিন্তু স্পেস থাকাটাও খুব জরুরি। আপনারা একে অন্যকে ভালোবাসেন বলেই পরস্পরের সব বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার পেয়ে যাননি। প্রতিটি মানুষের জীবনে কিছুটা ব্যক্তিগত স্পেসের প্রয়োজন হয়। না হলে সেই সম্পর্কে তিনি হাঁপিয়ে উঠবেন। সম্পর্কে স্পেস না থাকলে ব্রেক নেওয়া ভালো।
৬.অনিশ্চিত ভবিষ্যত
সম্পর্কের ভবিষ্যত্ নিয়ে যদি নিশ্চিত না হন, সেই সম্পর্ক নিয়ে একটু ভেবে দেখা প্রয়োজন। ভেবে দেখুন, আপনার সঙ্গী আদৌ এই সম্পর্কটা নিয়ে সিরিয়াস কিনা। সে কি আপনাকে সিত্যি সত্যিই ভালোবাসে, না শুধুই টাইম পাস করছে। সেই বিষয়ে নিশ্চিত না হতে না পারলে ব্রেকআপ করুন। এতে দুজনেরই একান্তে বসে সম্পর্ক নিয়ে ভাবার সুযোগ থাকে। আপনার সঙ্গী কিংবা আপনি নিজেও যদি মনে করেন, ‘ওকে ছাড়া আমার থাকা সম্ভব না, কেবল তখনই ফের শুরু করুন সম্পর্ক। নইলে এই সম্পর্কের স্থায়ী ইতি টানাই ভালো।
মনে রাখা ভালো, আমরা কিন্তু আপনার সম্পর্ক একেবারে ভেঙে দিতে বলছি না, সাময়িক ছুটি নিতে বলছি। যাতে করে পরস্পরের প্রতি অনুরাগ আরও বাড়ে। কথায় বলে না, ‘অসাক্ষাতে প্রেম আরও গভীর হয়।’ কিন্তু ব্রেক নেয়ার পরও যদি দেখেন সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন আসেনি, অর্থাৎ ভাব ভালোবাসা বাড়েনি- তাহলে সেই সম্পর্ক একেবারে শেষ করে দেয়াই ভালো। কথায় বলে না, ‘দুষ্ট গরুর চাইতে শূন্য গোয়াল ভালো।’ কোনও সম্পর্ককেই হালকাভাবে দেখা ঠিক নয়, এতে ভবিষ্যতে জীবনের জটিলতাই শুধু বাড়ে।
এমএ/