কমলনগরে টয়লেট বিড়ম্বনায় ১০ হাজার মানুষ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : টয়লেট বা শৌচাগার হলো পোর্সেলিন অথবা অন্যকোনো ধাতব বস্তু দ্বারা তৈরি এক প্রকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা যা মানুষের মলমূত্র ত্যাগ এবং সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। মানুষ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে টয়লেট বা শৌচাগার ব্যবহার করে। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছর নেই কোন পাবলিক টয়লেট।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের হাজিরহাট বাজারে “টয়লেট যখন সোনার হরিণ”-এমনটাই ভাবছেন সাধারণ মানুষ। এ বাজারটি উপজেলার সদর মানে বড় বাজার হিসাবে পরিচিত। প্রতিবছর বাজারে ইজারা পায় প্রায় সব মিলিয়ে ৬০ লাখ টাকা। এই বাজারের দোকান বা ব্যবসায়ীর সংখ্যা প্রায় ৮ শত। এ বাজারে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার লোক সমাগমে লোকারণ্যে পরিণত হয়। প্রায় দৈনন্দিন ১০ হাজারের মত মানুষ তাদের নিত্য দিনের কেনাকাটার জন্য যাতায়াত করে।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় বিগত কয়েক মাস থেকে বাজারে কোন শৌচাগার নেই। সাবেক ভূমি অফিসের পাশে নাম মাত্র একটা শৌচাগার থাকলেও তা বছর খানেক ধরে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
প্রতিনিয়ত টয়লেটের অভাবে দোকানদার থেকে শুরু করে সাধারণ জনগনকে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। যা পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ। মানুষ যততত্র মলত্যাগের কারনে নষ্ট বাজার এবং পরিবেশ সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
বাজারের পাশ গেঁসে স্কুল-মাদ্রাসা সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদেরও নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয় । বাজারের আশাপাশে স্কুল, কলেজ,কিন্ডারগার্টেন ও বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা রয়েছে।
তোয়াহা স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া (১৫) তার বাস্তবতা জানাতে গিয়ে জানান, প্রতিদিন স্কুল যাওয়ার সময় চলাচলের রাস্তায় মলমূত্রের বিশ্রী গন্ধে তাকে এবং তার সহপাঠীদের অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয়।বিদ্যালয় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বাজার হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে আসা-যাওয়া করছে।
যাতায়াতের দু’পাশে সবসময় মলমূত্র পড়ে থাকে।
ঔষধ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রাজিব(২২) জানান, যখনই প্রকৃতির ডাক আসে তাকে দোকান বন্ধ করে পাশ্ববর্তী আত্নীয়ের বাসায় শৌচাগার ব্যবহার করতে হয়, যা তার ব্যবসায়ের জন্য যেমন ক্ষতিকারক তেমনি প্রতিদিন আত্নীয়ের বাসায় যাওয়াও লজ্জাজনক।
বাজার ব্যবসায়ীদের গড়া সংগঠন “বণিক সমিতি”সহ বাজার কমিটি এই ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকায় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ এবং হতাশা। তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জানান, বাজারের শৌচাগার তৈরির জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার সরকারি বাজেট হয়েছে। কিন্তু জায়াগার অভাবে কাজ শুরু করতে পারছে না।তবে অচিরেই জায়গার সমাধানে টয়লেট নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
কিন্তু প্রকৃতির ডাক জায়গা সংকুলান বা শৌচাগারের অভাব বুজে না, সে ডাক দেয় তার আপন মনে যাতে মনূষ্য জাতি সাড়া দিতে বাধ্য। তাইতো সাধারণ মানুষের চাওয়া লক্ষ টাকার টয়লেটের চেয়ে মানসম্মত একটা পাবলিক টয়লেট। যাতে তাতে খোদাই করে লিখতে পারবে “ভোগে নয় ত্যাগী-ই প্রকৃত সুখ”
সেই সুখ বিসর্জনে বিঘ্ন ঘটলে কবি রফিক আজাদের সেই বিখ্যাত লাইন ‘ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো’ পরিবর্তী হয়ে কেউ একজন বলে উঠবে “টয়লেট দে হারামজাদা, নইলে তোর মন্ডুতে মল ত্যাগ করবো”
খোলাডাক/আমু/ডেস্ক/নিখিল