স্মৃতিতে অম্লান কালজয়ী নায়িকা রেশমা
বিনোদন প্রতিবেদক
ষাটের দশকের মঞ্চ ও রুপালি পর্দার নামী অভিনয়শিল্পী ছিলেন আজমেরি জামান রেশমা। অনেক দিন ধরেই তিনি ছিলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। বেশ অনেক বছরেও তাঁকে দেখা যায়নি টেলিভিশনে, সিনেমায় কিংবা কোনো উৎসব আয়োজনে। মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের মত নিজেকে একসময় গুটিয়ে নিয়েছিলেন, ছিলেন ওল্ডহোমে।
গেল ২০ মে অনেকটা নীরবেই চলে গেলেন ‘মুখরা রমণী’-খ্যাত কালজয়ী এ নায়িকা। বুধবার বেলা আড়াইটায় গ্রিন লাইফ হাসপাতালে থেমে যায় জনপ্রিয় এ নায়িকার জীবনযাত্রা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২।
রেশমা ১৯৬০ সালে বেতার ও ভয়েস আমেরিকায় ভয়েস আর্টিস্ট, উপস্থাপক ও সংবাদ পাঠক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সত্তরের দশকে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি ঘটে মুনীর চৌধুরী অনূদিত উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ নাটকে মূল চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। নাটকটির নির্দেশক ছিলেন বরেণ্য শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। অভিনয় করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘শেষের কবিতা’, ‘বৃত্ত থেকে বৃত্তে’, ‘সাঁকো পেরিয়ে’, ‘দিন বদলের পালা’সহ অনেক আলোচিত নাটকে।
তিনি দীর্ঘদিন মঞ্চে শিল্পনির্দেশকের কাজ করেছেন। ষাটের দশকে যুক্ত ছিলেন মঞ্চ সংগঠন ড্রামা সার্কেলের সঙ্গে। তাঁর জন্মস্থান ঢাকার মুন্সিগঞ্জ। তাঁর স্বামী জামান আলী খান ছিলেন ১৯৬১ সালে বিটিভির প্রথম প্রযোজক।
একই বছরে অর্থাৎ ১৯৬০ সালে তাঁর অভিষেক ঘটে সিনেমায়। ‘জি না ভি মুশকিল’ ছবির মধ্য দিয়ে সিনেমা জগতে পা রাখেন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য বাংলা ও উর্দু ছবির মধ্যে রয়েছে ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘নয়ন তারা’, ‘ইন্ধন’, ‘চাঁদ আর চাঁদনি’, ‘সূর্য ওঠার আগে’, ‘শেষ উত্তর’ প্রভৃতি।
“মুখরা রমণী বশীকরণ” তাঁর বিখ্যাত নাটক। এ নাটকে তাঁর সহশিল্পী ছিলেন আবুল হায়াত। এরপর “গোর খোদক”, “ক্ল্যাভিগো” নামের সেই নাটকেও আবুল হায়াত তার সহশিল্পী ছিলেন। ক্ল্যাভিকো নাটকটির নির্দেশনাও দিয়েছেন এ নায়িকা। তাঁর ছোট বোন নাজমা আনোয়ারও অভিনয় করেছিলেন।