করোনায় যে কৌশলে শুটিং
বিনোদন ডেস্ক
করোনায় থমকে গেছে পুরো বিশ্ব। এ অদৃশ্য শক্রর হাত থেকে মুক্তি পায়নি সিনেমার জগতও। টালিউড থেকে বলিউড, বলিউড থেকে হলিউড; সব জায়গার পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ঘরবন্দী।
কিন্তু আশার বিষয় হলো, বন্দী থেকেও শুটিং চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে! দ্য হলিউড-রিপোর্টার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, অনেক নির্মাতা ‘নতুন’ কিছু কৌশল বের করে কাজ চালাচ্ছেন।
জার্মানির প্রযোজক গুইডো রেইনহার্ড বলেন, ‘লকডাউন শুরু হওয়ার পর আমরা এক সপ্তাহ কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। আমরা তখনই হিসাব করেছি কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া যায়।’
রেইনহার্ডরা স্টুডিওতেই কাজ করছেন। এ জন্য নিজস্ব নীতিমালা সাজিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিলেও স্টুডিওতে ৫ ফুট দূরত্বে থাকছেন শিল্পীরা। প্রতিটি শটের পর ধোয়া হচ্ছে হাত। ক্যামেরার আশপাশে কোনোভাবেই তিনজনের বেশি কলাকুশলী থাকছেন না।
ভার্চুয়াল ট্রিক: রেইনহার্ড জানিয়েছেন কম জনবলে শুটিং চালিয়ে যেতে ভার্চুয়াল কৌশল অবলম্বন করছেন তারা। লং ফোকাল লেন্থে ক্যামেরা ধরা হচ্ছে। দু’জন অভিনেতাকে পাশাপাশি দেখাতে একজনের কাঁধের দিক থেকে আরেকজনের ক্লোজ শট নেয়া হচ্ছে।
মেকআপ: শুটিংয়ে মেকআপ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই শিল্পীরা নিজেরাই মেকআপ করছেন। পেশাদার মেকআপ শিল্পীরা বাড়ি বসে ভিডিওতে তাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। এক জনের মেকআপ আরেকজন যাতে ব্যবহার না করেন সে জন্য বক্সে মার্ক করা আছে।
নেটফ্লিক্স: আইসল্যান্ডের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজেদের ভিডিও নির্মাণের কাজ চালু রেখেছে নেটফ্লিক্স। তাদের একজন মুখপাত্র হলিউড রিপোর্টারকে বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করেছি। এ জন্য হাতেগোনা কয়েকটি লোকেশনে শুটিং চলছে। দিনে দুইবার ক্যামেরা জীবাণুমুক্ত করা হয়। কয়েক মিনিট পরপর শিল্পীদের হাত পরিষ্কার চলে।’
সবাইকে ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড: ব্রিটেনের নাট্য প্রযোজকেরা মুখোমুখি অবস্থান ছাড়াই দৃশ্য ধারণ করার উপায় বের করেছেন। শিল্পীদের বাড়িতে রেখেই করা হচ্ছে শুটিং! এ জন্য সিসি ক্যামেরার মতো বিশেষ নজরদারি ক্যামেরায় ফুটেজ নেয়া হচ্ছে।
জুম ব্যবহার করে পরিচালক নিজের বাড়িতে বসে শিল্পীর বাড়ির কাউকে দিয়ে ক্যামেরা চালাচ্ছেন। হেডফোনে তাকে নির্দেশনা দিচ্ছেন। ওই ক্যামেরার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে প্রডকাশন টিম সদস্যদের কম্পিউটারে।
‘ড্রামাটিক মনোলগ’: একাধিক শিল্পীর উপস্থিতি কমাতে ‘ড্রামাটিক মনোলগ’ থিওরি বেশি বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিখ্যাত ইংরেজ কবি রবার্ট ব্রাউনিং এই ধারাকে জনপ্রিয় করেন। তার ‘মাই লাস্ট ডাচেস’ কবিতাকে এ যাবতকালের অন্যতম সেরা ড্রামাটিক মনোলগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।