বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » বিবিধ » আমরা ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি- ডা: রাজীব কুমার সাহা
আমরা ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি- ডা: রাজীব কুমার সাহা
বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী ধরা পড়ে ৮ মার্চ। তারপর থেকে শুরু রোগী বাড়ার অংক। প্রথমদিকে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে খুবই ধীরে ধীরে। ১০০ রোগী হতে সময় লেগেছে প্রায় ১ মাস। এরপর থেকে অংকের হিসেব আলাদা। দ্রুত করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ার অংক। সারা পৃথিবী জুড়ে করোনা ভাইরাসের বিস্তার লাভের ইতিহাস অনেকটা এ ধরনের।
প্রথম করোনা ভাইরাস সনাক্ত হওয়ার থেকে ১০০ রোগী হওয়া পর্যন্ত ভাইরাসটি কিছুটা ধীর গতিতে ছড়িয়ে থাকে। ভাইরাসটি এই মন্থর সময় পাড়ি দিয়ে কিন্তু আর অপেক্ষা করে না। ছড়িয়ে পড়ে এক ভিন্ন গতিতে।
ইতালি, স্পেন, আমেরিকা, যুক্তরাজ্যেও করোনা রোগীর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে ছিল অনেকটাই ধীর গতিতে। এসব দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা ১০০ থেকে ১ লক্ষে পৌঁছাতে এক মাসও লাগেনি।
আমাদের দেশে প্রথম কেস রিপোর্ট হয় ৮ মার্চ। করোনা রোগী সংখ্যা শ’ ছাড়িয়েছে ৬ এপ্রিলের দিকে। আজ ২৯ এপ্রিলে সর্বমোট রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। একদিনে সর্বোচ্চ রোগী সংখ্যা বেড়েছে ৬৪১ জন। অর্থাৎ আমরা এখন Exponential Growth পর্যায়ে আছি।
এর সহজ মানে হলো দ্রুত হারে রোগী বৃদ্ধির পর্যায়ে। রোগী শনাক্তকরণের পরিমাণ অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে।এর ভেতর অন্যতম হলো আমরা কী পরিমাণে পরীক্ষা করছি এবং কত জায়গায় পরীক্ষা করছি।
বাংলাদেশের সব জেলায় পরীক্ষা করতে পারলে এবং পরীক্ষার পরিমাণ বাড়াতে পারলে আমরা যে আরো বেশি রোগী শনাক্ত করতে পারতাম তাতে কোন সন্দেহ নেই।
তারমানে হলো আমরা শনাক্ত করতে পারি আর না পারি রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রোগীর সংখ্যা যত বাড়বে সংক্রামিত মানুষের পরিমাণ তত বাড়বে। এই পর্যায়ে রোগের সংক্রমণ দ্রুত বাড়বে এবং রোগীর সংখ্যাও দ্রুত বাড়বে। বেড়ে বেড়ে তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে।
তাই এই সময়টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একদিকে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, রোগের সংক্রমণ বাড়ছে। অপরদিকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপরে চাপ বাড়ছে। চাপ বাড়ছে অর্থনৈতিক অবস্থার উপরে। একমাসের অধিক সময় লকডাউনে থাকায় স্বল্প আয়ের মানুষের উপর চাপের তৈরি হচ্ছে।
আর এই রোগের প্রকোপ কমাতে লকডাউন দীর্ঘায়িত করার কোন বিকল্প নেই। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতি দুটোই এখন গভীরভাবে ভাবনার বিষয়।
লেখক: এমবিবিএস, এম আর সি পি ( লন্ডন)
এমসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (চেস্ট)
মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
কনসালট্যান্ট, করোনা ইউনিট,
মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা।