মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » » করোনায় যুবক এবং তরুনরাই বেশি আক্রান্ত
করোনায় যুবক এবং তরুনরাই বেশি আক্রান্ত
বিশেষ ডেক্স : বরিশালের ৬ জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ৬৭ ভাগই তরুণ ও যুবক। গড় বয়স বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের কোথাও নতুন কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এ ছাড়া স্বস্তির খবর হচ্ছে রোববার পর্যন্ত ৬ জেলায় মোট ১২ জনকে করোনা থেকে মুক্তির সনদ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বরিশালে রোববার পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১ জন। জেলাওয়ারি হিসাবে বরিশালে ৩৬, পটুয়াখালীতে ২০, ভোলায় ২, পিরোজপুরে ৭, বরগুনায় ৩০ এবং ঝালকাঠিতে ৬ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, রোববারের আগে ২৪ ঘণ্টায় ৬ জেলায় নতুন কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি।
বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, জেলায় শনিবারের পর আর কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এর আগে যে ৩৬ জন করোনা রোগী ছিল শুধু তারাই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অসীত ভূষণ বলেন, রোববারের পূববর্তী ২৪ ঘণ্টায় কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পিসিআর ল্যাবে মোট ৯২ জন সন্দেহভাজন করোনা রোগীর ড্রপলেট টেস্ট করা হয়েছে। সুসংবাদ হচ্ছে এদের কারও শরীরে করোনা ধরা পড়েনি।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার জানান, করোনা শনাক্ত না হওয়ার পাশাপাশি একের পর এক করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার বিষয়টি আশার আলো দেখাচ্ছে আমাদের। ১২ এপ্রিল বরিশালে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে রোববার পর্যন্ত বিভাগের ৬ জেলায় মোট ১২ জন অসুস্থতা থেকে মুক্তি পেয়েছে। বরগুনায় দু’জনের প্রথমবারের ফলোআপ টেস্টে রেজাল্ট নেগেটিভ এসেছে। আশা করছি যে দ্বিতীয়বার টেস্টেও রেজাল্ট নেগেটিভ আসবে। এ ছাড়া এই বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে রোববার পর্যন্ত মোট ৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এদিকে বরিশালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের বয়স নিয়ে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে যে, আক্রান্তদের মধ্যে ৬৭ ভাগই তরুণ এবং যুবক। তুলনামূলকভাবে শিশু, বৃদ্ধ এবং নারীরা করোনায় কম আক্রান্ত হচ্ছেন। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হওয়া ৬১ জনের ওপর এই জরিপ চালানো হয়।
জরিপে দেখা যায়, মোট আক্রান্তের মধ্যে ১৯ দশমিক ১৯ জন নারী। এদের সংখ্যা ১১ জন। এ ছাড়া ৬ মাস, ৯ বছর এবং ১০ বছরের শিশু রয়েছে ৩ জন। ৭ জন রয়েছেন যাদের বয়স ৫৬-৭০। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিহ্নিতকরণ অনুযায়ী তরুণদের বয়স যেখানে ধরা হয় ১৮-৩০ সেখানে বরিশাল বিভাগে এই বয়সের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ জন। বাকি আক্রান্তের মধ্যে ৩১-৪৫ বছরের ১৪ জন এবং ৪৬-৫৫ বছরের ১০ জন।
জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, এর দুটি কারণ হতে পারে। আমরা জানি যে, এ পর্যন্ত বহুবার ধরন পাল্টেছে নভেল করোনাভাইরাস। প্রকৃতি পরিবর্তনের রূপ হিসেবে হয়তো বাংলাদেশে তরুণ এবং যুবকরা এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আরেকটা কারণ হতে পারে, আমাদের দেশে অধিকাংশ তরুণ-যুবকের মধ্যে লকডাউন না মানার প্রবণতা বেশি। তরুণ এবং যুবক শ্রেণিকে ঘরে আটকে রাখা সত্যিকার অর্থেই কঠিন। লকডাউনকে তারা কিছুই মনে করে না। প্রায় সব জেলা শহরের অলি-গলিতেই ঘর থেকে বের হয়ে ভিড় জমায় তরুণ-যুবকরা। এ কারণেও এখানে তরুণ এবং যুবকদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ বেশি হতে পারে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার বলেন, শুধু ৬১ জনই নয়, বরিশাল বিভাগে রোববার পর্যন্ত আক্রান্ত ১০১ জনের তথ্যচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখেছি আমরা। তাতেও একই ফলাফল মিলছে।
খোলাডাক/ এনএন