বন্দরে ফেলে যাওয়া সেই করোনা রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ
বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি শাহ আলম (৫০)। দীর্ঘ ২৬ দিন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসা নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে রংপুরের নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর শাহ আলম, তার স্ত্রী এবং চিকিৎসকদের মুখে যেন আনন্দের ঝিলিক। এ সময় হাসপাতাল কতৃপক্ষ শাহ আলমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়।
গত ২৯ মার্চ ঢাকা থেকে ট্রাকে উঠে রংপুরে যাওয়ার পথে শ্বাসকষ্টের কারণে ট্রাক থেকে শাহ আলমকে বগুড়া মহাস্থান বন্দরে ফেলে রেখে যায় ট্রাকচালক ও চালকের সহকারি। পরে স্থনীয় জনসাধারণ ও পুলিশের সহায়তায় প্রথমে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসকরা করোনার উপসর্গ দেখলে তাকে ৩০ মার্চ মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখান থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠালে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। তারপর থেকেই শাহ আলম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো।
রংপুরের নিজ বাড়তে যাওয়ার আগে শাহ আলম এ প্রতিবেদক-কে বলেন, আল্লাহর রহমতে এখানে খুব ভালো চিকিৎসা পেয়েছি। সবাই আমার খবর নিয়েছে। এখন বাড়িতে যাচ্ছি। বাড়িতে মানুষ যেন আমাকে অন্য চোখে না দেখে, এই কামনা করি। আমার জন্য এবং সবার জন্য দোয়া করবেন, সবাই যেন আমার মত সুস্থ হয়ে ওঠে।
শাহ আলমের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, আমাদের রোগী সুস্থ। আমরা বাড়িতে যাচ্ছি। সেখানে গ্রামের লোকেরা আমাদের সাথে যেন অন্যায় অত্যাচার না করে। আমরা যেন সমাজে ভালোভাবে থাকতে পারি, এটাই সবার কাছে কামনা করছি।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল আইসোলেশন কেন্দ্রের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিক আমিন কাজল এ প্রতিবেদক-কে বলেন, রংপুরের ধাপ এলাকার বাসিন্দা শাহ আলমের করোনা শনাক্ত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়। এর মধ্যে ১ এপ্রিল থেকে ৫ এপ্রিল তার নমুনা পজেটিভ আসে।
তার অবস্থা স্বাভাবিক ভেবে গত ১৩ এপ্রিল নমুনা রাজশাহীতে পাঠানো হলে ফলাফল নেগেটিভ পাওয়া যায়। আবারও ২১ এপ্রিল তার ফলাফল নেগেটিভ আসে। সবশেষ ২২ এপ্রিল বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে নমুনা পাঠানো হলে সেখানেও নেগেটিভ আসায় তাকে ছাড়পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়বলে জানান তিনি।
ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, শুক্রবার তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয় এবং স্ত্রীসহ এ্যাম্বুলেন্সে করে তার নিজ বাড়ি রংপুরে পাঠানো হয়। বগুড়ায় শনাক্ত হওয়া প্রথম করোনা রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠাতে পেরে আমরা আনন্দিত ও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। শাহ আলমকে ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়ার সময় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে।