বুধবার, ১৫ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » সারাদেশ » ডা. রাজিবের নেতৃত্বে করোনা সন্দেহ শ্রমিকের দাফন সম্পূর্ণ
ডা. রাজিবের নেতৃত্বে করোনা সন্দেহ শ্রমিকের দাফন সম্পূর্ণ
কমলনগর(লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : মহামারী করোনা ভাইরাসের দেশে আতঙ্ক চলছে। মানুষ মরলেই করোনার ভয় কাজ করে। মৃত দেহটি কি করোনায় আক্রান্ত.? এমনটাই ভাবে সর্বমহল। সামান্য সর্দি,জ্বর হলেই করোনার স্যাম্পল টেষ্ট করাতে হয়। স্যাম্পল টেস্টে পাঠাতে দেরি হয় না। কিন্তু লাশ দফন করতে ঘন্টার পর ঘন্টা দেরি হয়। প্রতিবেশি থেকে শুরু করে আপন ছেলে সন্তান পর্যন্ত মৃত বাবা মায়ের লাশটি দাফন করে না। কাছে পর্যন্ত দেখতে আসে না। এমনটাই দেখা যাচ্ছে দেশের আনাছে কানাছে।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে তোরাবগন্জ ইউনিয়নের ইট ভাটার শ্রমিক চাঁন মিয়ার ইন্তেকালে তেমনটাই হয়েছে।কেউ এগিয়ে আসেনি তার দাফন কাফনের কাজে।
এমন সময় উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.রেজাউল করিম রাজিব তিনি এগিয়ে এলেন। সাথে করে দাফন-কাফনের লোকজনও নিলেন। এবং চাঁন মিয়ার দাফন-কাফন সম্পূর্ণ করলেন।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ধর্মীয় সকল রীতিনীতির মাধ্যমে গোসল ও নামাজের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে চাঁন মিয়ার মরদেহ দাফন করা হয়।
জানা গেছে, চাঁন মিয়া ফেনী জেলার এক ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন। জ্বর আক্রান্ত হয়ে সোমবার তিনি ফাজিল বেপারীর হাট এলাকার বাড়ি ফিরেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতেই তিনি মারা যান। করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তার নমুনা সংগ্রহ করে। পরে বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
এদিকে করোনা সন্দেহে গভীর রাত পর্যন্ত মরদেহ দাফন করা হয়নি। দাফনে এগিয়ে আসছে না আত্মীয়-স্বজন কিংবা এলাকাবাসী। একপর্যায়ে চিকিৎসক রেজাউল করিম রাজীব মৃতদেহ দাফনের উদ্যোগ নেন। করোনা আক্রান্ত কিংবা সন্দেহভাজন মৃত ব্যক্তির দাফনের জন্য স্থানীয়ভাবে গঠন করা স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে মৃত ব্যক্তি বাড়িতে ছুটে যান। পরে ধর্মীয় রীতি মাধ্যমে গোসল ও জানাযা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়।
জানতে চাইলে চিকিৎসক রেজাউল করিম রাজীব জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে চাঁন মিয়া মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় চাঁন মিয়ার দাফনের কেউ এগিয়ে আসেনি। যার কারণে তার মৃত দেহ দাফনের কাজ আমরা করেছি।
স্থানীয়রা জানান, ডা.রেজাউল করিম রাজিব কমলনগর উপজেলা এ পর্যন্ত যত লোক করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তিনি ঝুঁকি নিয়ে সবার করোনা স্যাম্পল সংগ্রহ করে তা টেস্টের জন্য পাঠান। তিনি প্রতিনিয়ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিটি রোগীকে নিজের মত করে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। তার চিকিৎসা সেবায় রোগীরা খুবই সন্তোষ প্রকাশ করেন। মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে তিনি এ করোনা ক্লান্তি মুহুর্তে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
ডা. রাজিব কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিসিন, স্বাস্থ্য ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
খোলাডাক/ আরাফ/ ডেস্ক