শুক্রবার, ২৭ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » » জুম্মার নামাজের ফজিলত ও করনীয় কাজ
জুম্মার নামাজের ফজিলত ও করনীয় কাজ
বিশেষ প্রতিবেদন : জুম্মার নামাজের ফজিলত ও করনীয় সম্পর্কে হযরত আবু লুবাবা ইবনে আবদুল মুনযির (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, জুম্মার দিন হচ্ছে সবগুলো দিনের সর্দার । আল্লাহর নিকট সব দিনের চেয়ে মর্যাদাবান। কোরবানীর দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে বেশী মর্যাদাবান।
আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমরা শেষে এসেছি কিন্তু কেয়ামতের দিন সবার আগে থাকবো। যদিও অন্য সব জাতিগুলো (ইহুদী ও খৃষ্টান) কে গ্রন্থ দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে, আমাদের গ্রন্থ দেওয়া হয়েছে তাদের পরে। অতঃপর জেনে রাখো এই (জুম্মার) দিনটি আল্লাহ আমাদের দান করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে আমাদের সঠিক পথের দিশা দিয়েছেন। আর অন্য লোকেরা এ ব্যাপারে আমাদের পিছনে আছে। ইহুদীরা জুম্মার পরের দিন (শনিবার) উদযাপন করে আর খৃস্টানরা তার পরের দিন (রোববার) উদযাপন করে। (বর্ণনায়: বুখারী ও মুসলিম)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যাক্তি জু’আর দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে প্রথম দিকে মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কুরবানী করল, দ্বিতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন একটি গরু কুরবানী করল, তৃতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ছাগল কুরবানী করল। অতঃপর চতুর্থ সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে গেল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। আর পঞ্চম সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। অতঃপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যায়।’ (বুখারীঃ ৮৮১, ইফা ৮৩৭, আধুনিক ৮৩০)
যে ব্যাক্তি আদব রক্ষা করে জুম্মার সালাত আদায় করে তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তার জন্য পুরো এক বছরের রোজা পালন এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ার সমান সওয়াব লিখা হয়।
আউস বিন আউস আস সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- জুম্মার দিন যে ব্যাক্তি গোসল করায় (অর্থাৎ সহবাস করে, ফলে স্ত্রী ফরজ গোসল করে এবং) নিজেও ফরজ গোসল করে, পূর্বাহ্ণে মসজিদে আগমন করে এবং নিজেও প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোন কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনও কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যাক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব।’ (মুসনাদে আহমাদঃ ৬৯৫৪, ১৬২১৮)
জুম্মার দিনে কিছু করণীয় কাজ:
১. ফজরের আগে গোসল করা।
২. ফজরের ফরজ নামাজ়ে সূরা সাজদা [সিজদা] ও সূরা দাহর/ইনসান তিলাওয়াত করা।
৩. উত্তম পোষাক পরিধান করা।
৪. সুগন্ধি লাগানো।
৫. প্রথম ওয়াক্তে মসজিদে যাওয়া।
৬. সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা।
৭. মসজিদে গিয়ে কমপক্ষে দুই রাকা’আত সুন্নত আদায় করা।
৮. ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা।
৯. মনযোগ দিয়ে খুৎবাহ শোনা। খুৎবাহ চলাকালীন সময়ে কোনও ধরনের কোনও কথা না বলা; এমনকি কাউকে কথা বলতে দেখলে তাকে কথা বলতে বারণ করাও কথা বলার শামিল।
১০. দুই খুৎবাহর মাঝের সময়ে দু’আ করা।
১১. অন্য সময়ে দু’আ করা। কারণ এদিন দু’আ কবুল হয়।
১৩. রসূলের উপর সারাদিন বেশী বেশী দরূদ পাঠানো।
জুম্মার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য:
১. এই দিনে আদম (আ:)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে।
২. এই দিনে আল্লাহ্ তা’আলা আদম (আ:)-কে দুনিয়াতে নামিয়ে দিয়েছেন।
৩. এই দিনে আদম (আ:) মৃত্যুবরণ করেছেন।
৪. এই দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যে সময়ে হারাম ছাড়া যে কোনও জিনিস প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা প্রদান করেন।
৫. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। তাই আসমান, যমীন ও আল্লাহর সকল নৈকট্যশীল ফেরেশতা জুম্মার দিনকে ভয় করে।
খোলাডাক / তকী