মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম | সারাদেশ » আওয়ামী লীগের সম্পাদক মন্ডলির সদস্য হলেন. ফরিদুন নাহার লাইলী
আওয়ামী লীগের সম্পাদক মন্ডলির সদস্য হলেন. ফরিদুন নাহার লাইলী
আওয়ামী লীগের ২১তম কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ৮১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। শেখ হাসিনাকে নবমবারের মতো দলের সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত করা হয়েছে। আর দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলনে দ্বিতীয় ও শেষ অধিবেশনে কমিটির কিছু সদস্যের নাম ঘোষণা করেন সভাপতি।
২১তম কাউন্সিল শেষে নতুন কমিটিতে আওয়ামীলীগের সম্পাদক মন্ডলির সদস্য হিসেবে কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন ফরিদুন্নাহার লাইলী। এ নিয়ে টানা চতুর্থ বার তিনি এ পদে দায়িত্ব পান।
ফরিদুন নাহার লাইলী
তিনি একজন নারী মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ৪র্থবার দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। পূর্বে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিগত ১৮ দলীয় মহাজোটের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের শাসনামল ২০০৮ থেকে টানা ৫ বছর তিনি লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য পদে হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় এ অঞ্চলের নানাবিধ উন্নয়নে তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল। ওই সময়ে তার সহায়তায় এলাকার বহু বেকার তরুন-তরুনী সরকারি বেসরকারি চাকুরী পায়। তাতে অল্প সময়ের মধ্যে তিনি তরুণ-যুবকদের নিকট জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন।
সে কারণে নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহন করলেও বিগত সময়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরে দায়িত্ব পালনের কারণে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ তাঁকে রামগতি-কমলনগরের স্থায়ী বাসিন্দা বলেই মনে করতে শুরু করে।
সদায় হাস্যোজ্জল এ নারী বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। তিনি ১৯৫৪ সালের ১২ ডিসেম্বর নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়াইর ইউনিয়নের গোরিপুর গ্রামের এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর বাবা সাইদুর রহমান এবং মাতা মাহামুদা বেগম। বাবা মায়ের তৃতীয় সন্তান তিনি। জনাব লাইলী স্থানীয় হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করার পর ভর্তি হন কুমিল্লা উইমেন্স কলেজে। এই কলেজেই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের হাতে খড়ি হয়।
সর্বশেষ তিনি এ কলেজের ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ছাত্রলীগ কলেজ শাখার সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এইচএসসি পাশ করার পর রাষ্ট্রবিজ্ঞানে নিয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে সপরিবারে হত্যার পর ওই সময়ে অনেক নেতার সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনিও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৮০-১৯৮১ শিক্ষাবর্ষে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সামছুন নাহার হলের ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে ভিপি নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করার পর তিনি পুরোপুরি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদিকা হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় পালন করেন তিনি।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার গ্রেফতারের মুহুর্ত থেকে তাঁর মুক্তি লাভ করা পর্যন্ত প্রতিদিনই তিনি মহিলা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে সাবজেলের সামনে অবস্থান নিয়েছিল এ নারী নেতা। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে বহুবার কারাগারে যেতে হয়েছে। তাঁর স্বামী মরহুম শাহ্ আকবর ১৯৬৮-১৯৬৯ সালে নোয়াখালী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন এবং শহর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্বরত ছিলেন।
ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আন্দোলনের বিভিন্ন সময় ছাত্র ও গণ আন্দোলন সংগঠিত করার কাজে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল। জনাব ফরিদুন্নাহার লাইলীর একমাত্র সন্তান ডাঃ এসএম আকবর জ্যাফরী। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে বর্তমানে চিকিৎসা পেশায় কর্মরত আছেন।